চার জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা, একই পরিবারের তিনজনসহ নিহত ১০

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ১২ মার্চ ২০২২, ০২:০৩ | প্রকাশিত : ১২ মার্চ ২০২২, ০১:৫৫

চার জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ ১০জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় অন্তত ২৬ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর‌্যন্ত হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, ঢাকার ধামরাই, ময়মনসিংহের গৌরীপুর ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এ সব দুর্ঘটনা ঘটে।

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে দুটি বাস ও ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

ঢাকার ধামরাইয়ে প্রাইভেটকার ও সিএনজি অটোরিকশা সংঘর্ষে দুই ছেলেসহ মা নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় নিহত দুই ছেলের বাবা নাছির খান (৫৫) গুরুতর আহত হন। নিহতরা হলেন- ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া এলাকার বাসিন্দা পিয়ারা বেগম (৪৫), তার দুই ছেলে নাছিব খান (২২) ও ছোটন খান (১৮)।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় দুজন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- রামগোপালপুর গ্রামের মৃত শহর আলীর ছেলে শামছ উদ্দিন (৬০) । তবে অপরজনের নাম জানাতে পারেনি পুলিশ।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় স্থানীয় সাংবাদিক হাসান পারভেজ (৫৫) নিহত হন।

সংশ্লিষ্ট থানা ও হাইওয়ে পুলিশ এসব খবর নিশ্চিত করেছে।

বিস্তারিত প্রতিনিধিদের খবরে

সিলেট ব্যুরো

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে দুটি বাস ও ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হন। শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম। তবে তাৎক্ষণিক নিহতদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।

মইনুল ইসলাম জানান, কুমিল্লা থেকে সিলেটগামী যমুনা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে ঢাকাগামী একটি পাথরবোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঢাকা থেকে সিলেটগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসও দুর্ঘটনাকবলিত যমুনা পরিবহনের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। আহত হন অনেকেই। আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা আরও দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এদিকে, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে- আহতদের আর্তনাদ। অনেকেরই পা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কারও কারও পা কিংবা হাত একেবারে ভেঙে গেছে।

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকার ধামরাইয়ে প্রাইভেটকার ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে মা ও দুই ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন নিহত গৃহবধূর স্বামী।

রাত ১০টার দিকে ধামরাই-ধানতারা আঞ্চলিক সড়কের ঢুলিভিটা মমতাজ ডায়বেটিকস হাসপাতালের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া এলাকার বাসিন্দা পিয়ারা বেগম (৪৫), তার দুই ছেলে নাছিব খান (২২) ও ছোটন খান (১৮)। তাদের বাবা নাছির খান (৫৫) গুরুতর আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পিয়ারা বেগম তার দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে আত্মীয় বাড়ি থেকে নিজ বাড়ির দিকে সিএনজি অটোরিকশায় ফিরছিলেন। ঢুলিভিটা মমতাজ ডায়াবেটিস হাসপাতালের কাছে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে সিএনজির সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজিতে থাকা তিনজনই গুরুতর আহন হন। তাদের উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়ার পর ছোটন খানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। গুরুতর আহত পিয়ারা বেগম ও অপর ছেলে নাসিব খানকে ঢাকায় পাঠানো হলে পথে তারাও মারা যায়।

ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শায়লা শায়মীন জেসি বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত চারজন রোগী আসেন। তাদের মধ্যে একজন আগেই মারা যান। অপর দুজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হলে পথে তারা মারা যান।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থার প্রস্তুতি চলছে।

ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের রামগোপালপুর এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় দুজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা পৌণে ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- রামগোপালপুর গ্রামের মৃত শহর আলীর ছেলে শামছ উদ্দিন (৬০) । তবে অপরজনের নাম জানাতে পারেনি পুলিশ।

গৌরীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মজুমদার এই খবর নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, ঘটনার সময় নিহত শামস উদ্দিন রামগোপালপুর এলাকার রহমানিয়া মাদ্রাসার সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল একটি মোটরসাইকেল। এ অবস্থায় হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এসময় এক পথচারী ও মোটরসাইকেলচালক গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীরা আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজনই মারা যায়।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের পানি জাদুঘরের সামনের সড়কে রাস্তা পার হতে গিয়ে যমুনা লাইন পরিবহনের বাসের ধাক্কায় স্থানীয় সাংবাদিক হাসান পারভেজ (৫৫) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে বাসটি ফেলে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও স্থানীয়দের সহায়তার পুলিশ বাসটি জব্দ করেছে।

নিহত হাসান পারভেজ ডেইলি ইন্ড্রাস্টি পত্রিকার কলাপাড়া প্রতিনিধি ও কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সদস্য ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে হেঁটে বাজারের দিকে আসছিলেন পারভেজ। এসময় কুয়াকাটা থেকে ঢাকাগামী যমুনা পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৬৭০৯) বাসটি বেপরোয়াগতিতে যাওয়ার সময় রং সাইডে গিয়ে হাসান পারভেজকে চাপা দেয়। এসময় বাসটি না থামিয়ে তাকে প্রায় ৩০ ফুট টেনে নিয়ে যায়। এলাকাবাসী এ দৃশ্য দেখে এগিয়ে গেলে চালক ও হেলপার গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায়।

তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুল করিম জানান, তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।

কলাপাড়া থানার সেকেন্ড অফিসার হুমায়ুন কবির জানান, বাসটি জব্দ করলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১২মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :