‘হেয়ার ক্যাপ’ তৈরি করে স্বাবলম্বী দিনাজপুরের ৫০ হাজার নারী

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর
 | প্রকাশিত : ১২ মার্চ ২০২২, ১৩:২৭

দিনাজপুরের প্রত্যন্ত পল্লীর নারীরা সংসারের অভাব মোচনে, ভিন্নতর এক পেশা বেঁছে নিয়েছেন। গ্রাম-গঞ্জ থেকে সংগ্রহ করে আনা চুলের জট ছাড়িয়ে এবং হেয়ার ক্যাপ তৈরি করে মাসে রোজগার করছেন ছয় হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।

এতে সংসার থেকে অভাব দূর করতে পেরেছেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকার ১৫ টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার নারী। মূলত নারীরাই এ ব্যতিক্রম পেশার উদ্যোগতা।

নারীরা মাথা আঁচড়ানোর পর ফেলে দেন তাদের জট বাধা চুল। আর সেই জট বাধা চুল সংগ্রহ করে এনে জট ছড়ানো এবং হেয়ার ক্যাপ তৈরি এদের কাজ। অন্যান্য পেশার মতোই ৮ ঘণ্টার পরিশ্রমে নিজেদের সংসারের কাজের ফাঁকেই নারীরা এ ব্যতিক্রম কাজ করে খুঁজে পেয়েছেন স্বাবলম্বী হওযার পথ।

জট বাধা চুলের জট ছাড়িয়ে তা দিয়ে তৈরি করছেন হেয়ার ক্যাপসহ চুলেরই নানা পণ্য। পরিশ্রমের সাথে মজুরির সংহতি থাকায় স্থানীয় নারীরা সংসারের পলাতক মূহুর্তগুলোকে কাজে লাগাচ্ছেন। বাড়তি উপার্জন করে সংসার থেকে দূর করছেন অভাব।

এ ব্যতিক্রম পেশায় নিয়োজিত মরিয়ন বেগম বলেন, তার স্বামী তাতে ফেলে অন্যত্র চলে যাওয়ার এক সন্তান নিয়ে তিনি মহা বিপদে পড়েন। কিছুদিন পর বাবা-মা আর ভাই-বোনেরাও যেন ভারি বোঝা মনে করা শুরু করে। বর্তমানে এ পেশায় জড়িয়ে তিনি প্রতিমাসে আয় করেন, আঠারো হাজার টাকা। সে টাকা দিয়ে সন্তানের পড়া-লেখার পাশাপাশি দিব্যি সংসার চলছে তার। কিছু জমিও কিনেছেন তিনি। আগামীতে তিনি বাড়ি তৈরির স্বপ্নও দেখছেন। এমনিভাবে অসংখ্য নারী আজ স্বাবলম্বী।

সংসারে অভাব-অনটনে অনেকে ছেড়ে দিয়েছিলেন পড়া-লেখা। এসব কিশোরী-যুবতি এখন এ ভিন্নতর পেশায় খুঁজে পেয়েছেন নিজের আত্ম-কর্মসংস্থান। উপার্জিত অর্থ দিয়ে জোগাচ্ছেন, নিজের পড়া-লেখার খরচ।

হেয়ার ফ্যাশন নামে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সদরসহ কয়েকটি গ্রামে চালিয়ে আসছে, এ ব্যতিক্রম প্রকল্প। এতে হয়েছে, অনেকের কর্মসংস্থান।

স্থানীয় সাংসদ শিবলী সাদিক জানান, এ পেশায় জড়িয়ে এলাকার ১৫ টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবারে ৫০ হাজার নারী পেয়েছে অভাব-দারিদ্রতা থেকে মুক্তি। তাদের তৈরি হেয়ার ক্যাপ সহ চুলের বিভিন্ন পণ্য চলে যাচ্ছে চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচের বিভিন্ন রাষ্ট্রে।

তিনি বলেন, অন্যান্যরাও গ্রহণ করুক এমন উদ্যোগ। যাতে অবহেলিত নারীরা সম্পৃক্ত হতে পারবে কর্মসংস্থানে। স্বাবলম্বী হবে অনেক নারী। দূর হবে সংসারের অভাব-অনটন।

উচিষ্ট চুলগুলো মূল্যবান পণ্যে রূপান্তর করছেন, অবহেলিত নারী নিপুণ কারিগরেরা। আর এ পণ্যটির দেশ-বিদেশে চাহিদা বাড়ায় এতে আত্ম-কর্মসংস্থানের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই।

(ঢাকাটাইমস/১২মার্চ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :