যুদ্ধ বন্ধে এরদোয়ানকে নিজের শর্ত জানালেন পুতিন

প্রকাশ | ১৮ মার্চ ২০২২, ১৩:২৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরাদোয়ানকে নিজের কতগুলো শর্ত জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

গত বৃহস্পতিবার দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপ হয়। ফোনালাপ শেষ হওয়ার আধাঘণ্টার মধ্যে বিবিসি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিনের সাক্ষাৎকার নেয়। তিনি দুই প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ শুনেছিলেন।

তার সঙ্গে কথা বলে বিবিসি জানায়, রাশিয়ার দাবিগুলো দুই ভাগে বিভক্ত।

ইব্রাহিম কালিনের ভাষ্যে, সম্ভবত প্রথম চারটি দাবি ইউক্রেনের জন্য পূরণ করা কঠিন হবে না।

এর মধ্যে প্রধান দাবিটি হচ্ছে, ইউক্রেন সর্বদা ‘নিরপেক্ষ’ দেশ হিসেবে থাকবে। তারা কখনো ন্যাটোতে জোটে যোগ দেওয়ার আবেদন করবে না।

দুই নেতার ফোনালাপের আগে জেলেনস্কিও দেশের জনগণকে বাস্তবতা অনুধাবনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাদের জন্য ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার সুযোগ থাকলেও কখনো তাদের পক্ষে ন্যাটোতে যোগ দেওয়া সম্ভব হবে না।

আরেকটি দাবি হচ্ছে ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এটা জেলেনস্কিকে নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ ইউক্রেন কখনো সামরিক দিক দিয়ে রাশিয়ার জন্য হুমকি হবে না তা নিশ্চিত হতে চাইছেন পুতিন।

মূলত ন্যাটোতে যোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করেই ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। কারণ ইউক্রেন ন্যাটোভুক্ত দেশ হলে ওই অঞ্চলে ন্যাটোর সামরিক বাহিনী মোতায়েন হবে। রাশিয়ার দাবি পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো বাহিনী মোতায়েন হলে তা তাদের আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে।

তৃতীয় দাবি হচ্ছে, ইউক্রেনে রুশ ভাষা সংরক্ষণের নিশ্চয়তা দিতে হবে। কারণ দেশটিতে বহু রুশ ভাষাভাষী মানুষের বসবাস। 

চতুর্থ দাবি হচ্ছে, কথিত নাৎসী-মুক্তকরণ প্রক্রিয়া চালাতে হবে।

এ শর্ত পূরণ করা জেলেনস্কির জন্য কিছুটা কঠিন হবে। কারণ তিনি নিজেও একজন ইহুদি।তার স্বজনরা হলোকাস্টে মারা গেছেন।

অবশ্য তুরস্কের মতে, এ দাবি মেনে নেওয়া জেলেনস্কির জন্য কঠিন হবে না। কারণ নব্য-নাৎসীবাদের নিন্দা জানানো এবং সেগুলোকে দমন করাই ইউক্রেনের জন্য যথেষ্ট হবে বলে মনে করছে আঙ্কারা।

প্রথম ভাগের দাবি পূরণ করা জেলেনস্কির পক্ষে সম্ভব হলেও দ্বিতীয় ভাগের দাবি পূরণ করা তার জন্য কঠিন হতে পারে। এ দাবিগুলো নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি ইব্রাহিম কালিন।হয়ত পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল এবং ক্রিমিয়া নিয়ে দর কষাকষি হতে পারে।

তবে এসব চুক্তি করার আগে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে মুখোমুখি বসতে চান বলে জানিয়েছেন পুতিন। অবশ্য যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই পুতিনের মনোভাব জানতে বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন জেলেনস্কি।

বিবিসির পক্ষ থেকে ফোনালাপের সময় পুতিনের মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা নজরে এসেছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে কালিন বলেছেন,‘‘একদমই না।’’ তার ভাষ্যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন খুবই স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্টভাবে সবকিছু বলেছেন, তার বক্তব্যে কোনো ধরনের অস্পষ্টতা ধরা পড়েনি।

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/আরআর)