চিকিৎসার খরচ যোগাতে লাখ টাকায় সন্তান বিক্রি!

শওকত আলী, চাঁদপুর
| আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৯:০৯ | প্রকাশিত : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৮:৪৭

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জোবায়েরা আক্তার মিনা নামে ১৩ মাস বয়সী এক শিশু সন্তানকে তার বাবা-মা ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ সন্তানের পিতার নাম মো. বশির উল্লাহ্ মজুমদার ও মাতা আছমা আক্তার। তাদের বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার পৌরসভাধীন ৩ নম্বর ওয়ার্ড ধেররা-বিলওয়াই গ্রামের ইউনুস মজুমদার বাড়ি।

শিশুর পিতা-মাতা জানান, অভাবের তাড়নায় শিশুর পিতার চিকিৎসা করাতে না পেরে তারা শিশু বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২২মার্চ) বিকালে শিশু মিনার আপন চাচা আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। যদিও শিশুটিকে সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে শহরের চাঁদপুর নোটারি, পাবলিকের কার্যালয়ের মাধ্যমে রাজধানীর এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে সন্তানটি ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফেসবুকে লেখা-লেখি শুরু হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্তান বিক্রেতা পিতা মো. বশির ও মাতা আছমা আক্তার খবর শুনে তাদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান বলে জানান স্থানীয় সাংবাদিকরা।

শিশুটির বাবা মো. বশির মুঠো ফোনে জানান, ২০১৬ সালে সিএনজিচালিত স্কুটারের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর চিকিৎসাজনিত কারণে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি টাকার অভাবে চিকিৎসা এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। এছাড়াও তিনি অসুস্থতার কারণে আয়-রোজগার করতে পারছেন না।

তিনি বলেন, আমার সাড়ে তিন বছর ও তের মাস বয়সী দুইটি কন্যা শিশু রয়েছে। টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা, ঋণ পরিশোধ ও বাচ্চাদের খাবার কিনতে করতে পারছি না। এদিকে অসুস্থতার কারণে কাজও ঠিক মতো করতে পারছি না। সংসারে অভাবের কারণে সন্তানদের আহার যোগাতে পারছি না। তাই ছোট মেয়েকে দত্তক দিয়ে দিয়েছি। বিনিময়ে তারা আমার চিকিৎসার জন্য ১ লাখ টাকা দিয়েছে।

শিশুটির মা আছমা আক্তার বলেন, মেয়ের জন্য পরান পোড়ে। কিন্তু কী করবো, আমার স্বামীর চিকিৎসা দরকার। তিনি অসুস্থতার জন্য কোনো কাজ কর্ম করতে পারেন না। তিনি সুস্থ থাকলে আমাদের খাওয়া-পড়ার সমস্যা হতো না। তাই বাধ্য হয়ে মায়া ত্যাগ করে মেয়েটারে দত্তক দিয়েছি।

পৌরসভার কাউন্সিলের মহসিন ফারুক বাদল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দ্রুত ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। অভাবের কারণে সন্তান যদি বিক্রি হয়ে থাকে তা আমি সমাধান করার চেষ্টা করবো।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য আমি একটি বিশেষ টিম ঢাকায় পাঠিয়েছি। তারা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে গিয়েছে। তিনি জানান, দত্তক নেয়ার কিছু আইনগত বিধান রয়েছে। আমি আইনি প্রক্রিয়ায় যাযা করার সবই করব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার জানান, বিষয়টি গুরুত্বর অপরাধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।

(ঢাকাটাইমস/২৩মার্চ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :