মক্কেলকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের মামলায় আইনজীবী গ্রেপ্তার

বাগেরহাটে নারী মক্কেলকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগে করা মামলায় ফকির ইফতেখারুল ইসলাম রানা (৫২) নামে এক আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট শহরের খারদ্বার মল্লিকবাড়ির মোড়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকার ওই গৃহবধূ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। শুক্রবার বিকালে হাকিম (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) আদালতে ওই গৃহবধূ ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন।

আইনজীবী ফকির ইফতেখারুল ইসলাম বাংলাদেশ তাঁতী লীগ বাগেরহাট জেলা শাখার সদস্যসচিব।

মামলার এজাহারের বরাতে বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালে ওই গৃহবধূ পারিবারিক আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলাটি পরিচালনা করতে ফকির ইফতেখারুল ইসলাম রানাকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে মামলার কাজে গৃহবধূকে ওই আইনজীবীর চেম্বারে প্রায়ই আসা যাওয়া করতে হতো। চেম্বারে আসা যাওয়ার সুযোগে তিনি ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় ওই আইনজীবী মামলাটি চালাতে অনীহা প্রকাশ করেন এবং মামলায় তাকে হারিয়ে দেওয়ার ভয় দেন। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বিকালে ফোন করে গৃহবধূর আইনজীবী ফকির ইফতেখারুল ইসলাম রানা তাকে তার বাড়িতে ডেকে নেন। বাড়িতে রানার স্ত্রী না থাকার সুযোগে তিনি ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। ওই আইনজীবী গোপণ ক্যামেরায় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। এর কিছুক্ষণ পরে রানার স্ত্রী বাড়িতে এসে ওই গৃহবধূকে রানার কাছ থেকে উদ্ধার করে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন। গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে বলে এই ঘটনা কাউকে জানালে এই ভিডিও তোর স্বামীকে দেখাব এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ওই আইনজীবী। এরপর তিনি ভিডিও’র ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে আর বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেন। যা তিনি এতদিন ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেননি। সম্প্রতি তিনি বিষয়টি তার স্বামীকে জানালে তিনি তাকে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে গৃহবধূর করা মামলায় ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা বর্ণনা করে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার বেলা সাড়ে বারোটার দিকে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলি (পিপি) পাবলিক প্রসিকিউটর) মোহাম্মদ আলী বলেন, ফকির ইফতেখারুল ইসলাম রানা রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি)। শুনেছি তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। এই নিয়ে আপাতত কোনো কথা বলব না।

ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া সদস্য সচিব ফকির ইফতেখারুল ইসলাম রানার বিষয়ে বাগেরহাট জেলা তাঁতীলীগের কোনো নেতা কথা বলতে রাজি হননি।

ঢাকাটাইমস/২এপ্রিল/এআর