প্রতিদিন সড়কে রুটিন মাফিক হত্যাকাণ্ড চলছে: আসিফ

প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৪৯

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

‘আমার ছোট ছেলে রুদ্র নর্থসাউথ ভার্সিটিতে পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবল খেলে। এখান থেকে তার কিছুটা আয় রোজগারও আসে। এতদিন ভার্চুয়াল ক্লাস হতো, এখন ক্যাম্পাসে যেতে হয়। খেলা ক্লাস এক্সাম নিয়ে সে বিজি। জুম্মার নামাজ শেষ করে মুখে একটু খাবার দিয়েই বাইকে করে চলে গেল বসুন্ধরার মাঠে। আমি ওর রুমে শুয়ে একটু উদ্বিগ্ন হয়ে ভাবছিলাম, ছেলেটা বাইকে যাবে সময় বাঁচাতে, আল্লাহ না করুন যদি এক্সিডেন্ট হয়ে যায়!!’

‘এর চেয়ে বেশি ভাবতেই ভয় লাগে। তখনই অনলাইনে খবর দেখলাম, সকালে স্কুটি চালিয়ে যাওয়ার সময় কুড়িল ফ্লাইওভারে মাইশা মিম নামে নর্থসাউথের একজন শিক্ষার্থী কাভার্ড ভ্যানের চাপায় মারা গেছে। আমার মতই আরেকজন বাবার উদ্বেগ সত্যি হয়ে গেল। পরে জানলাম যথারীতি গাড়িটির কাগজ নেই, চালকও অবৈধ।’

‘বড় ছেলে রণ ব্র্যাক ভার্সিটিতে পড়ার সময় বাইকের জন্য খুব চাপাচাপি করছিল, যেন সময় বাঁচাতে জ্যাম এড়ানো যায়। রুদ্রও একটা স্কুটি চায়, বহু কষ্টে বুঝিয়ে বিরত রাখতে পেরেছি। ছেলের বক্তব্যও পরিষ্কার, সে তো রাইড নিচ্ছে কোনো না কোনো পাঠাও বাইকারের, রিস্ক তো থেকেই যায়!! বাবা হিসেবে ভীত হয়েছি ওদের বাইকের চাহিদার কথা শুনে, অথচ আমি ক্লাস সিক্স থেকে নিজেই বাইক চালাই।’

‘ছেলের রঙ্গিন মুখটি একটা দুর্ঘটনায় সাদাকালো ছবি হয়ে যাবে ভাবতেই নিজের চেহারা দেখি পাংশুবর্ণ। প্রতিদিন সড়কে রুটিন মাফিক হত্যাকান্ড চলছে, এগুলো নিছক দুর্ঘটনা নয়। এখন পর্যন্ত এসবের কোনো বিচার বা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে কিনা জানা নেই। কী এক অদৃশ্য শক্তিবলে পুরো দেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একদল স্বেচ্ছাচারী খুনি।’

‘ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে কক্সবাজারের চকোরিয়ায় বাবার অন্ত্যষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে গিয়ে মারা যায় চার ভাই। পরে আরও দুই ভাই মারা গেলে শূন্য হয়ে যায় সেই মায়ের পৃথিবীটা। একটা সাজানো গোছানো সংসার হয়ে গেল ছত্রখান। সড়কে জিম্মি পুরো জাতি, মৃত্যু বিভীষিকাময় এক উপত্যকার নাম বাংলাদেশ।’

‘ঘর থেকে বেরুলেই চিরবিদায় স্টোরের কাস্টমার হওয়ার চিন্তা এখন চরম বাস্তবতা। কে কখন সাদাকালো ছবি হয়ে যায় গ্যারান্টি নেই। ঘরে ঘরে চলছে কান্নার রোল, বীভৎস মৃত্যুর মিছিলে আমরা এখনো বেঁচে আছি, এটাই শুকরিয়া মহান আল্লাহর কাছে। এই অসহায় আত্মসমর্পণ চলবে আর কতদিন!!! কে দেবে এই প্রশ্নের উত্তর!!’

গায়ক আসিফ আকবরের ফেসবুক পেজ থেকে

ঢাকাটাইমস/৩ এপ্রিল/এএইচ