র্যাব পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে এনে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেপ্তার ৬
সম্প্রতি অপরাধী চক্রের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতো বেশভূষা ধারণ করে অপহরণ, ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা-খুনসহ নানা অপরাধ সংগঠিত করছে বলে অভিযোগ পায় র্যাব। পরে বুধবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত নিকুঞ্জ-২ এলাকা বিনু জেনারেল স্টোরের সামনে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে র্যাব পরিচয়ে অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
বৃহস্পতিবার বিকালে র্যাব-১ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নোমান আহমদ এসব তথ্য জানান।
ভুয়া র্যাব পরিচয়ে অপহরণকারী চক্রের গ্রেপ্তার সদস্যরা হলেন- হারুন-অর-রশিদ (৪০), সোহেল হাওলাদার (২৮), রবিউল সরদার (৩২), জামাল শেখ (১৯), আব্দুল সাত্তার (১৯) ও আশিক (২০)। এসময় অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এছাড়া তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করেছে।
র্যাব জানায়, এই চক্রের সদস্যরা নিজেদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে উপস্থাপন করতে বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক ও ওয়াকিটকি ব্যবহারসহ অস্ত্র বহন করে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্টিকার তৈরি করে গাড়িতে ব্যবহার করছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
এএসপি নোমান আহমেদ বলেন, গত ৪ এপ্রিল গার্মেন্টসকর্মী আব্দুছ ছালামকে পাঁচ থেকে ছয়জন ব্যক্তি র্যাব পরিচয়ে তার মিরপুরের বাসায় মারধর করে একটি প্রাইভেটকারে তুলে বাড্ডার দিকে নিয়ে আসে। আসামিরা ভিকটিমকে গাড়িতে তোলার পরপরই ভিকটিমের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ভুক্তভোগী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আসামি হারুনের বাসায় আটকিয়ে রেখে এলোপাতাড়িভাবে মারধর শুরু করে। পরে ওই ভুক্তভোগী টাকা দিতে রাজি হয়।
মুক্তিপণ দিতে রাজি হওয়ার পরে আসামিরা ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার মেয়েকে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে নিকুঞ্জ এলাকায় আসতে বলে। তবে শর্ত দেয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিলে তার বাবাকে জানে মেরে ফেলবে।
ভুক্তভোগী ছালামের মেয়ে এতো টাকা দিতে পারবে না বললে, তারা পাঁচ লাখ টাকায় দফারফা করতে চায়। বিষয়টি র্যাব-১ এর কাছে অভিযোগ দিলে এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করেন কর্মকর্তারা।
নোমান আহমেদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা একটি অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। এছাড়া তারা পরস্পরের সহযোগিতায় নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ডিবিসহ র্যাব পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীসহ আশেপাশের এলাকায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে ওঁৎ পেতে থাকে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের উপর হামলা, শারীরিক নির্যাতন ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে।
রাজধানীর উত্তরা মডেল থানায় ভুক্তভোগী আব্দুস ছালাম বাদি হয়ে গ্রেপ্তার আসামিদের নামে একটি অপহরণ মামলা করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/০৭এপ্রিল/এএইচ/কেএম)