তজুমুদ্দিনে মাদ্রাসা মাঠে মহিষের খামার!
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে মহিষের খামার গড়ে উঠেছে। এতে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুর্গন্ধের কারণে অনেক শিক্ষার্থী বহুদিন ধরেই ক্লাসে অনুপস্থিত। খামারের মালিক নুরুল হককে একাধিকবার বলার পরও খামারটি স্থানান্তর না করায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার দেওয়ানপুর গ্রামের খোশনদী দাখিল মাদ্রাসায়।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে প্রতিষ্ঠানটি দেওয়ানপুর গ্রামে স্থানান্তর করা হয়। ওই গ্রামের একাধিক দাতার জমিতে মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২০২০ সালে সরকারিভাবে একাডেমিক ভবন নির্মাণ হয়। ভবনের সামনের ৮ শতাংশ জমির মালিক ওই এলাকার নুরুল হক। সেই জমিতেই তিনি গত দুই বছর আগে ৮-১০টি মহিষ দিয়ে একটি খামার গড়ে তুলেছেন। প্রতিদিন ওই খামারে মহিষের পাল বেলা ১১টা পর্যন্ত বেঁধে রাখেন। মাঠে এসকল মহিষের মলমূত্র ও আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে করে মাদ্রাসাশিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আশপাশে বসবাসকারি মানুষজনও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, এরকম পরিবেশের কারণে প্রতিষ্ঠানে এ বছর নতুন কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। বরং এখানকার অনেক শিক্ষার্থী এবছর অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার এক স্টাফ জানান, ‘ওই জমি মাদ্রাসার জন্য ক্রয় করতে চাইলেও নুরুল হক বিক্রি না করে সেখানে মহিষের খামার করেন। করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে কেউ বাধা দেয়নি। পরে খোলার পর নতুন ভবনে ক্লাস শুরু হলে নুরুল হককে মহিষের খামার সরানোর জন্য বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।’
প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মনোয়ারা বেগম জানান, প্রতিদিন মহিষের মল-মূত্রের দুর্গন্ধে অতিষ্ট এখানকার ছেলে মেয়েরা। এখানে ক্লাস করাই দুষ্কর। অনেক ছাত্র-ছাত্রী দুর্গন্ধের কারণে ক্লাসেও আসে না।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, মহিষের দূষিত বর্জ্যে রোগ-জীবানু ছড়াচ্ছে। বারবার মহিষের মালিককে বলার পরও তিনি নিয়মিত বর্জ্য পরিষ্কার করছেন না। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দুই দিন আগেও শ্রমিক দিয়ে এসব বর্জ্য অপসারণ করেছে।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রফিকুল ইসলাম জানান, মহিষের বর্জ্যের গন্ধে প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করা দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা বারবার জমির মালিককে খামার সরানোর জন্য বললেও তিনি তা শুনছেন না। সে অন্যত্র জমি কিনে দেয়ার শর্ত দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে খামারের মালিক নুরুল হকের মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মরিয়ম বেগম জানান জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি এমন কোন কিছুই থাকতে পারবে না, যা শ্রেণি কক্ষে পাঠদানে সমস্যার সৃষ্টি করে।’
(ঢাকাটাইমস/৮এপ্রিল/এলএ/এসএ)