ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের যত হিসাব-নিকাশ

আবদুল হামিদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৫২ | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ০৮:৪৩

সারাদেশে একযোগে শনিবার সকাল ৮টা থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রথম দিন শনিবার (২৩ এপ্রিল) দেওয়া হবে ২৭ এপ্রিলের টিকিট। এবার কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের এনআইডি কার্ড বা জন্ম সনদের ফটোকপি দেখাতে হবে। একজন যাত্রী চারটি টিকিট কাটতে চাইলে চারজনেরই এনআইডি বা জন্মসনদ দেখাতে হবে, এছাড়া টিকিট দেওয়া হবে না বলে আগেই জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শনিবার সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার ঢাকাটাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ঈদযাত্রার বিক্রি করা টিকিট ফেরতে নেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার।

মাসুদ সারওয়ার জানান, এবার স্টেশনের কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের এনআইডি কার্ড বা জন্ম সনদের ফটোকপি দেখাতে হবে। একজন যাত্রী চারটি টিকিট কাটবে। সে ক্ষেত্রে চারজনেরই এনআইডি বা জন্মসনদ দেখাতে হবে, এছাড়া টিকিট দেওয়া হবে না।

শনিবার সকাল ৮টা থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। কমলাপুর স্টেশন ছাড়াও রাজধানীর আরও চারটি স্টেশন থেকে এবার ঈদের টিকিট দেওয়া হবে। এছাড়া অনলাইনেও এবার ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকেও অনলাইনে টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে।

কমলাপুর স্টেশনে ২৩টি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। আলাদা আলাদা ট্রেনের জন্য একটি করে নির্দিষ্ট কাউন্টার করা হয়েছে, যাতে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি কম হয়। এর মধ্যে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত টিকিট কাউন্টার রাখা হয়েছে।

ট্রেনের সব টিকিট সাধারণ যাত্রীর ভাগ্যে জুটবে না। বিচারপতি, এমপি, মন্ত্রী, সচিব, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাসহ ঠিকাদার-ব্যবসায়ীদের জন্যও অঘোষিত টিকিটের কোটা থাকবে।

৩৬টি আন্তঃনগর ট্রেনের আসন সংখ্যা ২৬ হাজার ৬৭২টি। তার মধ্যে ১৩ হাজার ৩৩৬টি টিকিট ২৩টি কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে। বাকি অর্ধেক অনলাইনে বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক টিকিট বিভিন্ন নামে ‘অদৃশ্য ব্লক’ করে রাখা হয়।

কমলাপুরে কোন কাউন্টারে কোন টিকিট:

কমলাপুর স্টেশনের ৭ থেকে ৯ নম্বর কাউন্টার থেকে দেওয়া হবে চলতি টিকিট। ১০ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে নীলসাগর এক্সপ্রেসের টিকিট, যা চলবে ঢাকা থেকে চিলাহাটি। ১১ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে চিত্রা এক্সপ্রেস, ১২ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে সুন্দর বন এক্সপ্রেস, ১৩ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে বেনাপোল এক্সপ্রেস যা চলবে ঢাকা থেকে খুলনা।

১৪ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস যা চলবে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম। ১৫ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে লালমনিরহাট ও রংপুর এক্সপ্রেস যা চলবে ঢাকা থেকে লালমনিরহাট ও রংপুর। ১৬ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস যা চলবে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়। ১৭ ও ১৮ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হচ্ছে একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস যা চলবে ঢাকা থেকে দিনাজপুর। আর ১৯ ও ২০ নম্বর কাউন্টারে থেকে দেওয়া হবে নারী ও প্রতিবন্ধীদের টিকিট।

অগ্রিম টিকিটের তারিখ:

প্রথম দিন ২৩ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৭ এপ্রিলের টিকিট। ২৪ এপ্রিল ২৮ এপ্রিলের, ২৫ এপ্রিল ২৯ এপ্রিলের, ২৬ এপ্রিল ৩০ এপ্রিলের এবং ২৭ এপ্রিল ১ মে'র ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। ঈদের পর ফিরতি যাত্রা হবে ৫ মে। সেই টিকিট বিক্রি হবে ১ মে।

রাজধানীর পাঁচ স্টেশনে পাওয়া যাবে টিকিট:

কমলাপুর স্টেশন থেকে দেওয়া হবে পশ্চিমাঞ্চল ও খুলনাগামী স্পেশাল ট্রেনের টিকিট। ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে পাওয়া যাবে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট। তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও দেওয়ানগঞ্জ স্পেশালসহ সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট মিলবে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে রাজধানীর গুলিস্তান ফুলবাড়িয়ায় (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২ মে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে ধরে নিয়ে টিকিট বিক্রির এই সময়সূচি নির্ধারণ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রোজা ৩০টি হলে অর্থাৎ ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল দেওয়া হবে ২ মে'র ট্রেনের টিকিট।

বাড়তি চাপের আশঙ্কা:

গত দুই বছরে অনেকে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যেতে পারেননি। এজন্য এবার ট্রেনে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়বে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে তিন-চারগুণ যাত্রী বেশি হবে। যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হবে সংশ্লিষ্টদের। তবে স্বাভাবিক সময়ের মতো পাঁচ দিন আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে পূর্বাঞ্চলে ১১৬টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ১০২টিসহ মোট ২১৮টি লোকোমোটিভ থাকছে।

ঈদযাত্রায় ২৭ ও ২৮ এপ্রিল প্রতিদিন কাউন্টার থেকে ১৩ হাজার ৩৩৬টি এবং ২৯, ৩০ এপ্রিল ও ১ মে দুটি স্পেশাল ট্রেনের সোয়া ১৪ হাজার অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঈদযাত্রার জন্য একটি অথবা দুটি টিকিট কাটতে লাইনে খুব কম লোক দাঁড়ান।

অধিকাংশ লোকই চারটি থেকে অধিক টিকিট কাটেন। এই হিসাবে সোয়া ১৪ হাজার টিকিট কাটতে পারবেন ৩ হাজার ৫৬২ জন। এ আসন সংখ্যার বিপরীতে বহু টিকিট আবার ভিআইপি নামে ‘ব্লক’ করে রাখা হয়।

এবারের ঈদযাত্রায় পূর্বাঞ্চলে ও পশ্চিমাঞ্চলে নিয়মিত ২১৮টি আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে স্পেশাল ছয় জোড়া ট্রেন চলবে। এর মধ্যে চাঁদপুর স্পেশাল-১ ও ২ যা চলবে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম। দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল যা চলবে ঢাকা- দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা। খুলনা স্পেশাল (মৈত্রীর দিয়ে), যা চলবে খুলনা-ঢাকা-খুলনা। সোলাকিয়া স্পেশাল-১ ভৈরববাজার - কিশোরগঞ্জ - ভৈরববাজার ও সোলাকিয়া স্পেশাল -২ ময়মনসিংহ - কিশোরগঞ্জ - ময়মনসিংহ। এই দুটি ট্রেন শুধুমাত্র ঈদের দিন চলাচল করবে। এছাড়া পবিত্র ঈদ উপলক্ষ্যে কোন সেলুন যুক্ত করা হবে না বলে জানান হয়েছে। আর এই স্পেশাল ট্রেন চলবে ২৯ এপ্রিল থেকে ২ মে। ঢাকায় ফিরতি স্পেশাল ট্রেন চলবে ৪ মে থেকে ৯মে পর্যন্ত। তবে স্পেশাল ট্রেনের টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে না।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এএইচ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :