গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষে স্বাবলম্বী সোহেল

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১৩:২৬ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১৩:২৮

শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুর জেলাধীন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাজারে এখন ব্যাপক শোভা পাচ্ছে তাইওয়ানের সোনালি বর্ণের বিদেশি গোল্ডেন ক্রাউন, বা ‘মাল্টা তরমুজ। এখন সাধারণত অধিকাংশ বাজারে দেখা মেলে সবুজ বা গাঢ়ো সবুজ বর্ণের তরমুজ। সৌদি আরবে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে দেশে এসে সোহেল রানা ব্যতিক্রমী সোনালি বর্ণের বিদেশি গোল্ডেন ক্রাউন, বা ‘মাল্টা তরমুজ’ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এ তরমুজ বিক্রি করে সোহেল এখন স্বাবলম্বী। তার দেখাদেখি অনেক কৃষক এ তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে।

গ্রীষ্মকালীন সবজির পাশাপাশি স্বল্প পরিমাণ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ‘গোল্ডেন ক্রাউন’ তরমুজ চাষ শুরু করেন। একদিকে যেমন সফলতা পেয়েছেন, অন্যদিকে লাভবান হয়েছেন তিনি। সোহেল রানার এই নতুন জাতের তরমুজ চাষে সফলতা দেখে উপজেলার অনেকেই এই চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। বিশেষ করে পবিত্র রমজানে এর চাহিদা খুবই বেশি।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গোল্ডেন ক্রাউন বা মাল্টা তরমুজ অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সুস্বাদু ফল। সাধারণত উঁচু জমি এবং দোআঁশ মাটি এই তরমুজ চাষের জন্য উপযুক্ত। সাধারণত তরমুজ মাটিতে হলেও এটি মাচায় বড় হয়। বীজ বপনের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ফুল আসে এবং ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মাথায় ফল কাটা শুরু হয়। এ তরমুজের আদি নিবাস তাইওয়ান। নতুন জাতের তরমুজটি উপজেলায় গত বছর থেকে চাষ শুরু হলেও বাজারে ভাল দামের পাশাপাশি চাহিদাও রয়েছে অনেক বেশি।

তরমুজ চাষি সোহেল রানা জানান, সবসময় বাজারে চাহিদা সম্পন্ন নতুন জাতের ফসল ও সবজি চাষ করেন। নতুন জাতের ফল ও সবজি চাষ করেন বলেই উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বরাবরই সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। ইউটিউব দেখে গোল্ডেন ক্রাউন বা মাল্টা তরমুজের বীজ নিয়ে আসেন তিনি। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে শীতকালীন ফসল শেষ হওয়ার পরে সেই জমিতে পরীক্ষামূলক ২০ শতক জমিতে বীজ বপন করে। বীজ বপনের পর গাছ ৬টি লম্বা হলে বাঁশের চটা দিয়ে মাচা দেয়া করে হয়। বপনের ২৫ থেকে ৩০ দিন পর ফুল আসে এবং দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে ফল কাটা শুরু হয়।

তিনি আরও বলেন, বাজারে ভাল দামের পাশাপাশি চাহিদাও রয়েছে অনেক বেশী। সপ্তাহ খানেক পরই তরমুজ বাজারে উঠবে। বাজারে বর্তমানে এই তরমুজের প্রতিটির দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। এই তরমুজ চাষে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা খরচ হলেও এক লাখ টাকা লাভবান হবেন বলে আশাবাদী সোহেল।

 

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমন হোসেন বলেন, মাঠ পর্যায়ে সকল ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, বিষমুক্ত ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়েছে গোল্ডেন তরমুজ ক্ষেতে। এ ক্ষেত্রে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন হয়েছে।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, নতুন জাতের এই তরমুজ চাষে কৃষক সোহেল রানাসহ অন্যদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছে কৃষি বিভাগ। এই সোনালী রঙের গোল্ডেন ক্রাউন বা ‘মাল্টা তরমুজ’ চাষ ছড়িয়ে দিতে উপজেলায় বিভিন্ন চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ। এখন এ এলাকার অধিকাংশ কৃষক সোনালী রঙের গোল্ডেন ক্রাউন বা ‘মাল্টা তরমুজ’ চাষে অনেক বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/এসএ)