ঘরোয়া উপায়ে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াবেন যেভাবে

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১১:২৯ | প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১১:২৭

গ্রীষ্মের গরমে সবাই অতিষ্ঠ। সেই সঙ্গে তীব্র গরমে মানুষের হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ছে। প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। হিট স্ট্রোকের লক্ষণ হিসেবে মাথা ঝিমঝিম, বমি, চোখে ঝাপসা দেখা, অবসাদ ও দুর্বলতা, মাথাব্যথা, মাংসপেশির খিঁচুনি দেখা দেয়। এছাড়াও হিট স্ট্রোক হলে চামড়া খসখসে ও লাল হয়ে যাওয়া, হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট, দৃষ্টিবিভ্রম বা হ্যালুসিনেশন হতে পারে।

প্রচণ্ড গরমে শরীরে পানিশূন্যতা এবং বিভিন্ন ওষুধের প্রভাবেও হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে এই গরমে দেহে পানি কমে গিয়ে যেন ডিহাইড্রেশন না হয় তা নিশ্চিত করা। এছাড়াও রোদে যারা দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করেন, তাদের হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

রোদ থেকে ঘেমে শরীরে এসি-ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলে ক্ষণিকের জন্য স্বস্তি পাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়। মাথা ধরে থাকা, নাক দিয়ে পানি পড়ে, গলা খুশখুশ, কাশি এসব কিন্তু লেগেই থাকে। যাদের সাইনাস বা মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে এই রোদ থেকে তাদের কষ্ট হয় সবচেয়ে বেশি। আর তাই সরাসরি রোদ থেকে ফিরলে কিন্তু ঠান্ডা পানি খাবেন না। কিছুক্ষণ বসে তবেই পানি খান।

হিট স্ট্রোক এবং সাইনাসের ব্যথা এড়াতে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে কিছু পানীয় বেশ কার্যকর। এতে শরীরের একাধিক সমস্যা কিন্তু দূর হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আর শরীর থাকবে ঠান্ডা। বিশেষ করে ইফতারিতে এ সময় সবাই ঠান্ডাজাতীয় খাবার ও পানীয় রাখেন খাদ্য তালিকায়। কেউ কেউ গরম থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পেতে কোল্ড ড্রিংকসও রাখেন। কিন্তু এই পানীয়তে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি থাকে। তাই এ সময় বাসায় তৈরি বিভিন্ন ড্রিংকের ভরসা রাখা উচিত।

সাইনাসের সমস্যা থাকলে আদা, রসুন, আনারস, কাঁচামরিচ, নারিকেল তেল এবং হলুদ কিন্তু দারুণভাবে উপকারী। প্রতিদিন ডায়েটে বা ইফতারিতে এই সব খাবার রাখতে পারলে খুবই ভাল। এছাড়া যে সব ড্রিংক বানিয়ে নেবেন বাড়িতেই।

বেদানা-ওটস ড্রিংক

বেদানা, ওটস, দুধ, চিয়া সিডস, পাকা পেঁপে আর আপেল একসঙ্গে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। সম্ভব হলে দু একটা আখরোটও দিতে পারেন। এই পানীয় আপনার শরীরকে রক্ষা করবে রোদের হাত থেকে। এছাড়াও এই একগ্লাস পপানীয়ের মঘ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের জন্য ভাল। এক্ষেত্রে সব সময় ফ্রিজের ঠান্ডা দুধ ব্যবহার করবেন।

আম পান্না ড্রিংক

গরমে আম পাওয়া যায়। শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য কাঁচা আম অনেক উপকারী। এ জন্য প্রথমে কাঁচা আম সিদ্ধ করে নিন। তাতে এবার পরিমাণমত লবণ, পানি, চিনি ও মসলা দিয়ে জাল করলেই হয়ে যাবে আম পান্না। চাইলে কয়েকটি পুদিনা পাতার কুঁচিও মেশাতে পারেন।

গাজর বিনস ড্রিংক

ছোট ছোট টুকরো করে গাজর, বিনস, কড়াইশুঁটি, টমেটো, মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ করার সময় নুন, গোটা গোলমরিচ সামান্য হলুদ, স্লাইস করে কাটা আদা-রসুন ছাড়া আর কিছুই দেবেন না। এবার এই স্যুপ গরম গরম খতে পারেন না চাইলে তা একটু ঠান্ডা করে ব্লেন্ডারে পিষে নিয়েও খেতে পারেন। তবে চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারলে কিন্তু সবথেকে ভাল।

ছাতুর ড্রিংক

শরীর ঠান্ডা রাখার উপকরণ তো এতে রয়েছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন পুষ্টিগুণও রয়েছে। ঠান্ডা পানিতে লবণ, ছাতু, লেবুর রস, জিরার গুঁড়া, বিট লবণ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কেউ কেউ মরিচ ও পুদিনা পাতা মিশিয়ে খেয়ে থাকেন এটি।

আইসড জলজিরা

প্রথমে ঠান্ডা পানিতে তেঁতুলের পেস্ট, পুদিনা পাতার কুচি, জিরার গুঁড়া, গুড়, বিট লবণ, আদার গুঁড়া, লেবুর রস, অল্প পরিমাণে মরিচ গুঁড়া ও মসলা মিশিয়ে তৈরি করুন জলজিরা। এটি স্বাদে খুবই ভালো এবং শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে।

পুদিনা-লেবুর ড্রিংক

পুদিনা পাতার সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে সহজেই তৈরি করা যায় এই উপকরণটি। সঙ্গে বিট লবণ, গোল মরিচ এবং চিনিও মেশানো যেতে পারে। চাইলে কয়েক টুকরো বরফও দিতে পারেন।

তেঁতুল ড্রিংক

তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় খনিজ, ইলেকট্রোলাইটস এবং ভিটামিন, যা শরীরের তাপমাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অল্প পরিমাণ তেঁতুল পানি ১০ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করুন।

বাটার মিল্ক ড্রিংক

বাটার মিল্ক প্রোবায়োটিকের একটি ভালো উৎস। গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে প্রয়োজনীয় যে ভিটামিন এবং খনিজ শরীর থেকে দূর হয়ে যায়, তা পূরণে সাহায্য করতে পারে বাটার মিল্ক।

ডাবের পানি

গরম থেকে বাঁচতে ডাবের পানির কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। এই গরমে প্রতিদিন একটি ডাব খেতে পারেন।

অ্যালোভেরা ড্রিংক

গরম থেকে বাঁচতে এই প্রাকৃতিক উপাদান দারুণ সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালোভেরা জুস পান করলে শরীর গরম সহ্য করার জন্য তৈরি হয়ে যায়।

দই-মসলার ড্রিংক

মসলা ছাঁচ এখন প্যাকেটেই পাওয়া যায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এটি তাজা খাওয়ার স্বাদ অনেক বেশি। এর জন্য টক দইয়ে ও অল্প পানিতে ধনে পাতা কুঁচি, কাঁচা মরিচ কুঁচি, পরিমাণমত লবণ ও চাট মসলা মেশালেই হয়ে যায় মজাদার ছাঁচ। যা শরীর ঠান্ডা রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কলা-কিউই ড্রিংক

এককাপ কলা, কিউই, আনারস, আপেল, আমন্ড বাটার, খেজুর, চিয়া সিডস আর টকদই দিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার তা ছেঁকে নিয়ে খান। এই ড্রিংকে শরীর ঠান্ডা থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ এপ্রিল/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :