‘শ্রমিকের মজুরি ছয় থেকে আট গুণ বেড়েছে’

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ মে ২০২২, ১৬:২২

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠন করার আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল এক হাজার ৬৫০ টাকা, এখন সেটি ৮ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। পাটকল শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল মাত্র ৯৬০ টাকা, এখন সেটি হয়েছে ৮ হাজার ৩০০ টাকায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এভাবে বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিকদের মজুরি ৬ থেকে ৮ গুণ বেড়েছে। একই সাথে শ্রমিকদের চিকিৎসা, যাতায়াত, বাড়িভাড়া, গার্মেন্টস শ্রমিকদের দুপুরের টিফিনের ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন ভাতা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সরকার নিশ্চিত করেছে।

রবিবার (১ মে) দুপুরে তথ্যমন্ত্রীর চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুরপাড়স্থ বাসভবনে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়- তখন তিনি ভারত থেকে যাতে দেশে আসতে না পারেন সেজন্য সব প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল জিয়াউর রহমান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা ঘোষণা করেছিলেন, যেকোন মূল্যে বাংলাদেশে আসবেন। তার এই দৃঢ়চেতা মনোভাব, একইসাথে আন্তর্জাতিক নানা প্রেসারের কারণে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু কন্যাকে দেশে আসতে দিতে বাধ্য হয়েছিল।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজ পহেলা মে, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন। এই বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নানাবিদ পদক্ষেপে শ্রমজীবী মানুষের আয়-উন্নতি বাড়া সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, আশির দশকে স্লোগান হতো শ্রমিকের মজুরি হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের মূল্যের সমান। অথচ এখন শ্রমিকের মজুরি ১৫ কেজি চালের মূল্যের সমান উন্নীত হয়েছে। চট্টগ্রাম এলাকায় ৭শ’ থেকে ৮ শ’ টাকার নিচে কোন শ্রমিক পাওয়া যায় না, ঢাকায়ও তাই, উত্তরবঙ্গে কিছুটা কম। একজন রিকশাওয়ালা-ভ্যানচালক ভাই আগে যদি একদিন বাহন না চালাতো, তার চুলাতে আগুন জ্বলত না। এখন একজন রিকশাওয়ালা ভাই যদি মনে করেন আজকে বাহন চালাব- আগামীকাল চালাব না, সেটি তার পক্ষে সম্ভব।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ১০ টাকা কেজিতে চাল, বিনামূল্যে চালসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি মানুষকে নানাভাবে সহায়তা দেয়া হয়। এগুলো আগে কখনো ছিল না। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যখন পৃথিবীতে জীবনযাত্রায় নাভিশ্বাস উঠেছে। ভোজ্য তেলের দাম ইউরোপে ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য পণ্যের দাম ইউরোপে ৪০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউকেতে খাদ্যপণ্যের দাম ২৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে সুপার মার্কেটে নানা ধরনের খাদ্যপণ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশে সেটি হয়নি। অনেকে বক্তৃতা করেন, ‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটের দিকে তাকান না।’ এতো বিশ্ব সঙ্কটের মধ্যেও আমাদের দেশে জীবনযাত্রা নির্বিঘ্ন আছে।

আজকে শ্রীলঙ্কা, ভারত ও পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখুন। পাকিস্তানের শহরাঞ্চলে ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং, গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং। সেইক্ষেত্রে আমাদের দেশ কোথায় আছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর নানাবিদ পদক্ষেপের কারণে হয়েছে।

ক্ষমতায় এলে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে বিএনপি, মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন শ্রমিকরা যখন অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করেছে, তখন তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আদমজী শ্রমিকরা যখন আন্দোলন করেছে, তখন কি করেছে আপনারা জানেন। কৃষি শ্রমিকরা যখন সার ও কৃষি উপকরণের জন্য আন্দোলন করেছে তখন তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শ্রমিকরা যখন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করেছে তখন বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা করেছে। এটিই হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যার সাথে অন্যদের পার্থক্য।

শেখ হাসিনাকে দেশে আসার জন্য জিয়াউর রহমান সহযোগিতা করেছিলেন বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে মিথ্যাচার করতে করতে ওরা সব বিষয়ে মিথ্যাচার করে। তারা যে ইতিহাস বিকৃতি করে সেটার আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে এটি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন দেশে আসেন তখন বিমানবন্দরে যাতে লোকসমাগম না হয়- সেজন্যও নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। দেশে আসার পর তিনি ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে একটি মিলাদ পড়াতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান সেই মিলাদ পড়ানোর অনুমতি দেয়নি। পরে ৩২ নম্বরের বাড়ির সামনের রাস্তায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে শহীদদের মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ পড়াতে হয়েছে। এই হচ্ছে জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি, আর টুকু সাহেব কি বলেন?

সবাইকে আগাম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের অন্য যেকোন বছরের তুলনায় এবছর ঈদযাত্রা অনেক নির্বিঘ্ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সব ব্যবস্থাপনাগুলো নির্বিঘ্ন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যাবতীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। সেই কারণেই এবছর ঈদযাত্রাটা অন্য বছরের তুলনায় অনেকটা নির্বিঘ্ন হয়েছে। এই বছর মহাসড়ক, রেল যোগাযোগ সব ক্ষেত্রেই অন্য বছরের তুলনায় ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো।

এসময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার, সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :