অস্বস্তির মহাসড়কে স্বস্তির যাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
 | প্রকাশিত : ০১ মে ২০২২, ২০:১৫

যানজটের মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল হয়ে উত্তরের পথ। ঈদের আগে এ মহাসড়কে ভোগান্তি বাড়ে কয়েক গুণ। এবারের ঈদেও এমনটা ধারণা করেছিলেন এ মহাসড়কের যানচালকসহ যাত্রীরা। তবে রবিবার পর্যন্ত এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও জট বাড়েনি। জয়দেবপুর হতে এলেঙ্গা পযর্ন্ত চার লেন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হলেও এলেঙ্গার পর থেকে ১৩ কি.মি. দুই লেনের রাস্তাই ঘরফেরা মানুষের ভোগান্তির কারণ হতে পারে বলে ধারণা করছিলেন চালকসহ সংশ্লিষ্টরা।

এ জন্য আগে থেকেই যানজট নিরসনে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ব্যতিক্রম কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। আট শতাধিক অতিরিক্ত পুলিশকে যানজট নিরসনে মহাসড়কে রাখা হয়। পুলিশের পাশাপাশি মহাসড়কে দুইশ’ এপিপিএনের সদস্য যানজট নিরসনে কাজ করছে। দুই লেনের ১৩ কি.মি. রাস্তায় যেন যানজটের সূত্রপাত না হয়, সেজন্য ভূঞাপুর থেকে এলেঙ্গা লিংক রোড পর্যন্ত ডাইভার্ড করে বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া রাস্তার দুপাশের দোকানে যেন গাড়ি অহরহ থামাতে না পারে সে ব্যাপারেও পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। যানজটরোধে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের এমন প্রস্তুতিতে এখনও মহাসড়কে যানজট হয়নি। ভোগান্তিতে পড়েনি উত্তরের পথে ঘরমুখো মানুষ।

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে নাড়ির টানে ঘরে ফিরছে মানুষ। ভোগান্তি ছাড়াই ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু-সেতু মহাসড়ক ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গগামী পরিবহনগুলো চলাচল করেছে। বিগত ঈদগুলোতে এই মহাসড়কে যানজটে নাকাল থাকলেও এবারের ঈদে বাড়ি ফেরার চিত্র ভিন্ন। স্বস্তিতে ঈদে বাড়ি ফিরছে তারা। রবিবার ভোররাতে হোটেলে সেহরি খাওয়া নিয়ে গাড়ি জটলা বাঁধা শুরু করলেও পরক্ষণেই স্বাভাবিক হয়। এরপর আর জটের সৃষ্টি হয়নি।

ঈদের ছুটিতে গত শুক্রবার (২৯ এপ্রিল ) থেকে রবিবার (০১ মে ) সকাল ৬টা পর্যন্ত তিন দিনের বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপার হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ১৯০টি যানবাহন। এরমধ্যে মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে ২১ হাজার ১৩৩টি। এ থেকে দেখা যাচ্ছে, মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। এসব যানবাহন থেকে সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৯ কোটি দুই লাখ ২ হাজার ৭৫০ টাকা। এরমধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গগামী পরিবহন বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়েছে ৭১ হাজার ৯৫৬।

জানা গেছে, জেলা পুলিশের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে এবার ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কে তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি উত্তরবঙ্গগামী মানুষের। মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত এক লেনে চলেছে পরিবহন। এতে উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পরিবহনগুলো সেতুপূর্ব গোলচত্বর হতে ভুঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। ফলে চাপ পড়েনি মহাসড়কে। এছাড়া ঈদের ছুটিতে ঢাকার গার্মেন্টগুলো পৃথক পৃথক সময়ে ছুটি দেয়ায় মহাসড়কেও প্রভাব কম পড়েছে। এতে এক রকম স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছে তারা। বিগত ঈদগুলোর মত মহাসড়কে ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি।

মহাসড়কে চলাচলকারী পরিবহনের চালকরা জানান, ধারণা ছিল ঈদে যানজটে পড়ে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। কিন্তু ভোগান্তি হয়নি। সাধারণ সময়ের মত গন্তব্যে পৌঁছানো গেছে। তবে মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব টোলপ্লাজা পর্যন্ত সড়কে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, এবার ঈদে মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা ছিল বেশি। বিগত কয়েকদিন এলাকায় পরিবহনের ব্যাপক চাপ ছিল। সেতুর সবগুলো টোল বুথ চালু ছিল। এছাড়া মোটরসাইকেলের জন্য টোলপ্লাজার দক্ষিণপাশে আলাদা দুইটি টোল বুথ স্থাপন হয়েছে। গত তিন দিনে ৯ কোটির অধিক টাকা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :