বাহুবলে দুই সন্তানকে নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন সিমু

প্রকাশ | ০২ মে ২০২২, ১৭:০২ | আপডেট: ০২ মে ২০২২, ১৭:০৪

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

দীর্ঘদিন থাকার জন্য একটা পাকা ঘর নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না সিমু আক্তারের। পরিবারের টানাপোড়েনের কঠিন দুঃসময়ে সিমু দুশ্চিন্তাগ্রস্ত চেহেরায় ফিরে এলো হাসির ঝিলিক। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন গৃহহীন সকল মানুষকে দেওয়া হবে জায়গাসহ পাকা বাড়ি। তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপির সার্বিক সহযোগিতায় সিলেট রেঞ্জ কর্তৃক বাহুবল থানার ব্যবস্থাপনায় গৃহহীন তালিকায় উঠে আসে অসহায় সিমুর নাম। 

বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম খান তাদের জন্য মিরপুর ইউনিয়নের বশিনা গ্রামে ব্যবস্থা করেন দুই শতক জমি। সেই জমিতে দুইটি বেড রুম, একটি বারান্দা, রান্নাঘরসহ নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। বিদ্যুৎসংযোগ প্রদানসহ বৈদ্যুতিক পাখা, বাতি লাগানো হয়। ঘরের পাশে বৃক্ষরোপণ করেন রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি। এছাড়া গত ১০ এপ্রিল সারাদেশে পুলিশ বাহিনীর সহায়তায় নির্মিত বাড়িগুলো উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

রবিবার বাহুবলের মিরপুর ইউনিয়নের বশিনা সিমু আক্তারের জন্য নির্মিত ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন।

সাথে ছিলেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলিসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পরে ডিআইজি মফিজ উদ্দিন ও হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ নির্মিত ঘরের আঙ্গিনায় বৃক্ষরোপণ করেন এবং ভবিষ্যতে জীবিকা নির্বাহের জন্য কিছু হাঁস-মুরগি ও ঈদ উপহার দেন।

দৃষ্টিনন্দন বাড়ি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা সিমু আক্তার বলেন, ঘর পেয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুলিশ প্রধান আইজিপি, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মফিজ উদ্দিন, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, বাহুবল মডেল থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আজ আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আলোর মুখ দেখেছে। দুই সন্তানকে নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছি, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর হতে পারে না। আমি খুব অসহায়, আমার দুইটি কন্যা সন্তান। তারা ছোট থাকাকালে আমার স্বামী প্রায় ১৪ বছর আগে আমাকে ফেলে চলে যায়। আমি আমার আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি থেকে আমার দুইটি কন্যা সন্তানকে অনেক কষ্ট করে লালন-পালন করেছি।

তিনি আরও বলেন, ঈদের একদিন আগে নতুন ঘরে থাকতে পারব- কখনোই কল্পনা করতে পারিনি। আজ আমি নতুন ঘরে দুই সন্তানকে নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারব।

অসহায় সিমুর পিত্রালয় বশিনা গ্রামেই দৃষ্টিনন্দন এই ঘর নির্মাণ করে পুলিশ। এতে রয়েছে রান্নাঘর, ও বৈদ্যুতিক সংযোগও।

বাহুবল সার্কেল আবুল খয়েরের সঞ্চালনায় পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি শতাধিক দুঃস্থ ও সুবিধাবঞ্চিতদের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- সিলেট রেঞ্জ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম, সুপার জেদান আল মুসা, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মাহমুদুল হাসান, হবিগঞ্জ সদর সার্কেল মাহফুজা আক্তার শিমুল, বানিয়াচং সার্কেল পলাশ রঞ্জন দে, বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম খান, পরিদর্শক ( তদন্ত) প্রজিত কুমার দাশ, পুটিজুরী ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোবারক হোসেন, শ্রমিক নেতা আসকার আলী, বাহুবল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী, মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদসহ অনেকে।

(ঢাকাটাইমস/২মে/এলএ)