প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বিলুপ্তপ্রায় ঈদকার্ড

প্রকাশ | ০২ মে ২০২২, ১৭:৩৩

আফরোজা আক্তার

ঈদকার্ড শুধুই একটি শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যম নয়, এটি আবেগ, অনুভূতি আর ভালোবাসার সংমিশ্রণ। একটা সময় ঈদ এলেই ঈদকার্ড দিয়ে শুরু হতো ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়। গ্ৰাম, পাড়া, মহল্লার অলিগলিতে বাহারি রঙের ঈদকার্ড পাওয়া যেত। পাড়া-মহল্লায় কিশোর-কিশোরীরা টেবিল পেতে ঈদকার্ড নিয়ে বসতো। গ্ৰামের মুদি দোকানে পাওয়া যেতো ঈদকার্ড।

ঈদকার্ডে লেখা থাকতো বিভিন্ন ছন্দ, কবিতা, শুভেচ্ছা বার্তা, আঁকা থাকতো চাঁদ, তারা, ফুল, পাখি, কার্টুন, পুতুলের ছবি। ঈদকার্ডের পাশাপাশি থাকতো বিভিন্ন মিনিস্টিকার।

যদ্দুর জানা যায়, সত্তুর দশকে ‘রেখায়ন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে প্রথম হাতে আঁকা ঈদকার্ডের প্রচলন করে। এই তো এক দশক আগেও ঈদকার্ড আদান-প্রদান একটি ট্রেন্ড ছিল। ইন্টারনেটের এই যুগে হারিয়েই গেল ঈদকার্ড বিনিময়ের সংস্কৃতি!

এখন শুভেচ্ছা বিনিময়েও প্রযুক্তির ছোঁয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবারে বার্তা পাঠিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এতে সেই আগের মতো আবেগ-অনুভূতি কোনোটিই নেই।

ছোটবেলায় যখন কেউ ঈদকার্ড দিত তখন ঈদের আনন্দ যেন কয়েকগুণ বেড়ে যেত। ঈদ এলেই ব্যস্ত হয়ে যেতাম ঈদকার্ড সংগ্রহে। অনেকসময় প্রতিযোগিতাও শুরু হয়ে যেত যে, কার কাছে কতগুলো ঈদকার্ড এসেছে।

এই প্রজন্মের অনেকেই হয়তো জানে না ঈদকার্ড কি জিনিস! সময়ের পরিক্রমায় আর প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিশ্ব যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি কেড়ে নিচ্ছে অনেক কিছু। আগামী প্রজন্মের কাছে ঈদকার্ড হয়ত পূর্বপ্রজন্মের সংস্কৃতি হিসেবেই থাকবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।