এবি পার্টির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ মে ২০২২, ০১:১৯

রাজনৈতিক দল এবি পার্টির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদারের মাধ্যমে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচির দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন দলটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ইফতার পার্টি, পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসব ও দলটির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্যই করেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

এসময় এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানাতে আসা বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানান পার্টির আহবায়ক ও সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী। অতিথিদের সম্মানে ইফতারের আয়োজন করা হয়। ইফতারের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ঈদ উৎসবের অনুষ্ঠান শুরু হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- বুদ্ধিজীবী ও অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ। তিনি বলেন, এবি পার্টির উদ্যোক্তাদের স্বাগত জানাই। বাংলাদেশ একটি সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে এবি পার্টি একটি আশার আলো দেখাচ্ছে। তারাই প্রথম রাষ্ট্র পুনর্গঠনের ডাক দিয়েছে। একটি বিষয় শুরু হলেই তা চূড়ান্ত পর্যায়ে যায় না। আমি এবি পার্টির নেতৃবৃন্দকে বলব- আওয়ামী লীগ, বিএনপি থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে হবে। পার্টির ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকল নেতাকর্মীকে আমি শুভেচ্ছা জানাই।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বলেন, আমি রাজনীতি করি না। কিন্তু এবি পার্টির সাথে আমার অন্তরের সম্পর্ক, কারণ তারা সত্যিকারের রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। যার কারণেই আমি পার্টির জন্মলগ্ন থেকেই আন্তরিকভাবে সাথে থাকার চেষ্টা করেছি। বিগত পঞ্চাশ বছরেও আমরা জাতিকে কিছুই দিতে পারিনি। বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো দেশকে আর কিছু দিতে পারবে সেই সম্ভাবনাও আমি আর দেখি না। এখন জাতীয় সরকার নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেটিও জনগণের সামনে পরিষ্কার হতে হবে। যা নিয়েই আলোচনা হোক আমার মনে হয় তরুণরা ছাড়া এই ফ্যাসিবাদী পরিস্থিতির অবসান হবে না। তাই সামনে জাতি এবি পার্টির তরুণ নেতৃত্বের দিকেই তাকাবে বলে আমার বিশ্বাস।

গণ-অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন এই সরকার ভুলুন্ঠিত করেছে। এবি পার্টি স্বাধীনতার সেই স্বপ্ন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ। পৃথিবীর বহু দেশেই নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ নিয়ে বৃহৎ শক্তিগুলো হাসাহাসি করেছে, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে নতুনরা সফল হয়েছে। সরকার দলীয় নেতারা আছে টাকা পাচারের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে। আমরা বিরোধী দল হিসেবে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের এই অর্থ লুট বন্ধ করব ইনশাআল্লাহ। এবি পার্টির সাথে আমাদের অনেক বিষয়ের মিল রয়েছে। আগামীতে আমরা এক সাথে এগিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ। এবি পার্টির জন্ম দিনে সকল নেতাকর্মীকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। নতুন বা পুরাতন অনেক রাজনৈতিক দল দেশে অনেক রয়েছে, কিন্তু এবি পার্টিকে মানুষ কেন পছন্দ করবে সেটি আপনাদের প্রথম বিবেচনায় নিতে হবে। নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগের সূচনাতেই পার্টির নেতাদের আমি অনুরোধ করব বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মসূচি নির্ধারণ করুন। জনগণের চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা ও অধিকারের ওপর গবেষণামূলক বক্তব্য উপস্থাপন করুন। ইনশাআল্লাহ জনগণ আপনাদের সাথে যুক্ত হবে।

সাবেক মন্ত্রী নাজিমুদ্দীন আল আজাদ বলেন, যেদিন জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ নামে রাজনৈতিক উদ্যোগ শুরু হয়েছিল সেদিন আমি উপস্থিত ছিলাম। আজ ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপস্থিত থাকতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আপনারা অনেক এগিয়ে গেছেন। জনগণের অধিকার সামনে রেখে কর্মসূচি উপস্থাপন করুন। সামনে আপনারা নেতৃত্ব দিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। এবি পার্টির জন্মদিনে সবাইকে শুভেচ্ছা।

কবি আব্দুল হাই শিকদার বলেন, আমার খুব প্রিয় কিছু মানুষ এই নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছেন। এবি পার্টি আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এটাই বাস্তবতা। আমি তাদের শুভ কামনা জানাই। আশা করি, ফ্যাসিবাদ পতন ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনে আগামীতে এবি পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।

এদিন বিকাল পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে রাত আটটা পর্যন্ত চলা এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে এবি পার্টির নেতৃবৃন্দকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএলডিপির চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী নাজিমউদ্দীন আল আজাদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা কমান্ডার সাব্বির আহম্মেদ, ন্যাপের সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সিদ্দিকুর রহমান খান, বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির চেয়ারম্যান মুফাসসির অধ্যাপক বজলুর রহমান আমিনী, জাতীয় সংহতি মঞ্চের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একেএম আশরাফুল হক, গণ সমাজ পার্টির সভাপতি সরদার শামস আল-মামুন (চাষী মামুন), গণ বিপ্লবী পার্টির সভাপতি প্রকৌশলী ইনামুল হক।

এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মজিবুর রহমান মঞ্জু'র সঞ্চালনায় মূল অনুষ্ঠান বর্ষপূর্তির কেক কাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির কেক কাটেন।

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মহসীন রশীদ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী রুবী আমাতুল্লাহ, বিশিষ্ট কলামিস্ট বুদ্ধিজীবী গৌতম দাস, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ আবদাল আহমেদ।

এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, তাজুল ইসলাম, আনিসুর রহমান কচি, যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যোবায়ের আহমেদ ভুইঁয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক বিএম নাজমুল হক, পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, দক্ষিণের সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, যুব পার্টির সমন্বয়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, নাসরীন সুলতানা মিলি, যুবনেতা এম ইলিয়াস আলী, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব ফিরোজ কবির, নারী নেত্রী সুলতানা রাজিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামাল হোসাইন, মিনহাজুল আবেদীন শরীফ, আফ্রিদ হাসান তমাল, আব্দুল হালিম নান্নু, আমেনা বেগম, শীলা আক্তারসহ মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও যুব পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ মে নতুন ধারার অধিকারভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবি পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/২মে/এসআর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :