চীনে ভবন বিধ্বস্তের ৬ দিন পর এক নারী উদ্ধার

প্রকাশ | ০৫ মে ২০২২, ১৮:১৩ | আপডেট: ০৫ মে ২০২২, ১৮:২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

গত শুক্রবার চীনের হুনান প্রদেশের চাংশা শহরে ছয় তলা একটি ভবন বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার ছয় দিন পরে (গত বুধবার মধ্যরাতে) এক নারীকে উদ্ধারের খবর জানিয়েছে স্থানীয় উদ্ধারকারী দল।

বিবিসি জানায়, ওই ভবনটিতে একটি হোটেল, অ্যাপার্টমেন্ট ও সিনেমা হল ছিল।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গ্লোবাল টাইমস’ জানায়, ভবন বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আর বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

এ ছাড়া, ঘটনার ৮৮ ঘণ্টা পর আরেক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এতক্ষণ কীভাবে বেঁচে ছিলেন সে সম্পর্কে তিনি সাংবাদিকদের তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

তিনি জানান, ভবন বিধ্বস্তের পরে চার তলা থেকে নিচে পড়ে যান। সৌভাগ্যক্রমে, তার শরীরের উপরে দেয়ালের কোনো অংশ পড়ে যায়নি। তার মাথার ওপরে দেয়ালের একটি অংশ ত্রিভুজাকৃতির আকারে পড়ে ছিল। তিনি যেখানে পড়ে ছিলেন, সেখানে একটি পাত্রে অর্ধেক পানি ছিল। তিনি প্রতিবার শুধু এক চুমুক পানি পান করতেন। আর শরীর গরম রাখার জন্য কম্বল মুড়িয়ে ছিলেন।

ভবনটি বিধ্বস্তের কারণে তার মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ কয় দিন শুধুমাত্র তারিখ ও সময় চেকের জন্য মোবাইলটি ব্যবহার করতেন। মোবাইলের চার্জ যেন ফুরিয়ে না যায়, এ কারণে খুব হিসেব করে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। তাকে উদ্ধারের সময়ও মোবাইলের চার্জ কিছুটা অবশিষ্ট ছিল।   

উদ্ধারকারীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি শক্ত কিছু দিয়ে দেয়ালে আঘাত করতে থাকেন। পরে উদ্ধারকর্মীরা তা টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করেন।

তার এ ঘটনাটি চীনের সামাজিক মাধ্যমে ‘চাংশার মেয়ে’ হিসেবে ভাইরাল হয়েছে। দেশটির বহু মানুষ তার এ ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ভবন বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তত নয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। চার জনের বিরুদ্ধে দুর্ঘটনায় গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে এবং বাকি পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ‍ভুয়া দলিলপত্র সরবরাহের অভিযোগ করা হয়। 

চীনে ভবন বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। ভবনের নিরাপত্তার মান দুর্বল হওয়ায় এবং গুণগত মান নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত থাকা কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

জানুয়ারি মাসে চংকিং শহরে একটি ভবনে বিস্ফোরণের পর তা ধসে পড়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস লিক হয়ে এ বিস্ফোরণ হয়েছে। এ ঘটনায় ১২ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়।

২০২১ সালের জুনে শিয়ান শহরের একটি আবাসিক ভবনে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৫ জন নিহত হন।

একই মাসে একটি মার্শাল আর্ট স্কুলে আগুন লাগার ঘটনায় ১৮ জন নিহত হন।

(ঢাকাটাইমস/০৫মে/আরআর)