পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়ার মোহনায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

শওকত আলী, চাঁদপুর:
 | প্রকাশিত : ০৬ মে ২০২২, ১৮:৫৭

চাঁদপুরের বঙ্গবন্ধু পর্যটন পার্ক দর্শনার্থীতে ভরে উঠেছে এবং চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনায় ঈদের তিনদিন পরও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়ে আনন্দে মুখর হয়ে উঠেছে শহরের মোলহেড এলাকাটি।

গত দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে চাঁদপুরের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র তিন নদীর মোহনা বড় স্টেশন মোলহেড বন্ধ থাকলেও এবার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। যার কারণে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলার দর্শনার্থীদের পদাচরণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রটি। শিশু, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন স্বল্প সময়ের বিনোদনের জন্য এখানে এসে ভিড় জমাচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে পানির বিচিত্র রঙ ও ঢেউ দেখে লোকজনের মন মুগ্ধকর পরিবেশের সৃস্টি হয়ে উঠেছে। এই স্থানটির নতুন করে নাম দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু পর্যটন পার্ক। তবে এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এখনও হয়নি।

শুক্রবার বিকেলে মোলহেডে গিয়ে দেখা গেছে, মিনি ট্রাকে করে তরুণরা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, অটোবাইক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস করে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ঘুরতে এসেছে। দর্শনার্থীদের মধ্যে অনেকেই মোলহেডের গাছের নিচে বসে তিন নদীর মিলন স্থলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে চাঁদপুর মডেল থানা পুরিশ।

পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করলেই দেখা যায় প্রতীকী ইলিশের ভাস্কর্য (ইলিশ সেলফি স্ট্যান্ড)। দর্শনার্থীরা এখানে ছবি তোলার জন্য ভিড় করছেন। এরপাশেই আছে নাগরদোলাসহ শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলার জিনিসপত্র এবং ঘোড়া। মোলহেডের মাঝখানে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘রক্তধারা’।

এছাড়াও দর্শনার্থীরা বিনোদনের জন্য ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীতে ট্রলার ও স্পিড বোট ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া করে ঘুরে বেড়ায়। তবে নদীতে ট্রলারে উঠার জন্য লাইফ জ্যাকেট পরার নির্দেশনা আছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা জাহিদুল ইসলাম ও ইব্রাহীম বলেন, ঈদ ছাড়াও সময় পেলেই আমরা এখানে ঘুরতে আসি। কারণ এখানকার পরিবেশটা খুবই মনোমুগ্ধকর ও আনন্দে ভরা স্পন্দনে ভরা।

হাজীগঞ্জ থেকে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, বছরের অন্য সময় ঘুরার সময় হয় না। যার কারণে ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার এখানে ঘুরতে এসেছি। এখানে আসলে সময়টাও ভাল কাটে ও অনেক ভালো লাগে।

বাংলাদেশ অভিনয় শিল্পী সংঘের সদস্য ও চাঁদপুর বর্ণচোরা নাট্য শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী বলেন, চাঁদপুরে মোলহেড ছাড়া আর কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় সব লোকজন এখানে ছুটে আসে। আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সব লোকজনের একটাই দাবি চাঁদপুরে একটি বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হোক।

বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন লিটন বলেন, বিকল্প বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় অল্প জায়গায় হাজার হাজার মানুষ ভিড়ে জমজমাট। শুধু চাঁদপুরের লোকজনই নয়, বিভিন্ন জেলার মানুষ এখানে আসেন। আবার মোলহেডে ভিড় থাকার কারণে চাঁদপুরের লোকজন অন্য জেলায় ভ্রমণ করতে যায়। আমাদের চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে হলেও বড় ধরনের একটি বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা এখন সময়ের দাবি।

চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বড় স্টেশন মোলহেডে ও বঙ্গবন্ধু পর্যটন পাক দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। যার কারণে আমাদের ৩টি করে ৬টি মোবাইল টিম সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে। এখানে দর্শনার্থীদের ব্যাপক রিনাপত্তা জোরদার কওে রাখা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৬মে/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :