পরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ, যাত্রীদের ভোগান্তি

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ মে ২০২২, ১৯:২৯

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষ। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন ঢাকামুখী মানুষ। এবার ঈদে বাড়ি যাওয়ার পথে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যেমন স্বস্তি ছিল তার চেয়ে দ্বিগুণ স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরছেন কর্মস্থলে। এ মহাসড়ক দিয়ে আসা-যাওয়ায় ব্যাপক স্বস্তিদায়ক হওয়ায় উচ্ছ্বসিত তারা। তবে পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে নৈরাজ্য কিছুতেই কমছে না বলে অভিযোগ করেছেন অসংখ্য ঢাকামুখী মানুষ।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে শিকার রহিমা আক্তার। পেশায় গার্মেন্টসকর্মী। স্বামী-সন্তান নিয়ে তিনি যাবেন কর্মস্থল আশুলিয়া।তার বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী এলাকায়। সিএনজিযোগে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড এসেছেন। এখান থেকে যাবেন গাজীপুরের চান্দুরা। বাস শ্রমিকরা ভাড়া হাঁকাচ্ছে ৩৫০ টাকা। অথচ তার মতে, স্বাভাবিক ভাড়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। আবার সিএনজিতে চাচ্ছেন ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েন তিনি।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার জাবেদ হোসেন। সে যাবেন সাভার রডমিস্ত্রীর কাজে। দীর্ঘ সময় কড্ডারমোড় দাঁড়িয়ে থাকার পর পিকআপযোগে ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে এসে নেমেছেন। কিন্তু বিধিবাম। দীর্ঘ সময় এলেঙ্গা দাঁড়িয়ে থেকেও যানবাহন না পেয়ে হতাশ হন। মাঝে মধ্যে বাস পেলেও সেগুলোতে ভাড়া চাচ্ছেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। আর স্বাভাবিক ভাড়া ১৫০ টাকা বলে জানান তিনি।

শুধু রহিমা আক্তার বা জাবেদ হোসেন একা নয়। তার মতো কর্মস্থলে ফেরা অসংখ্য যাত্রীরা কয়েকগুণ অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করছে। ভাড়া আদায় এমন নৈরাজ্যরে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। তবে, তাদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেরিক্ষেতে পরিবহন শ্রমিকরা জানান, তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। তাছাড়া সারা বছর তো স্বাভাবিক ভাড়া নেয়া হয়। ঈদের সময়ে কিছু ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে। আসার পথে খালিই ফিরতে হয়।

সরেজমিনে শনিবার (৭ মে) বিকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু রেলস্টেশন, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোল চত্বর-ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় যাত্রীদের থেকে। অন্যদিকে, দেখা যায়- মহাসড়কে পরিবহনের চাপ থাকলেও ঢাকামুখী কর্মস্থলে ফেরা মানুষ স্বস্তিতে ফিরছেন। কোথাও নেই যানজট।

অপরদিকে, নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে ফেরার জন্য বাস কাউন্টারে ভিড় লক্ষ্য করা যায়। অনেকে বাস না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি, খোলা ট্রাক, পিকআপ, মাছবাহী মিনিট্রাক ও মোটরসাইকেলসহ যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই পরিবহনযোগে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে স্থানে ফিরছেন। এদিক, প্রাইভেটকারও ভাড়া করে অনেকে যৌথভাবে কর্মস্থলে ছুটছেন ঢাকামুখী মানুষ।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিচ্ছে এটি অসত্য না। ঈদের সময় উপজেলা বা জেলা পর্যায়ের বাসস্ট্যান্ড থেকে গাজীপুরের চন্দুরা, মহাখালী পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যায়। আসার পথে খালি ফিরে আসে। তবে, রবিবারের পর থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই তাদের।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের পরিস্থিতিতে বিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান বলেন, মহাসড়কে গত শুক্রবার থেকেই ঢাকামুখী যানবাহনের বৃদ্ধি। শনিবারও তেমন। তবে, যানজট নেই। সন্ধ্যার পর যানবাহন বৃদ্ধির আশঙ্কা করছি। যানজট নিরসনে তাৎপর রয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে যাত্রীদের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৭মে/এআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :