কবিতা

মা : সর্ব রোগ নিবারক নিদান

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২২, ১৫:০২

ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া

ভাষার খাজানায় তালা নয়; একেবারে সিলগালা,

কথার অগ্নিগিরি অন্ত:স্থ কুণ্ডে সয় উদগীরণ-জ্বালা।

কতো দিন ধরে আমি পড়ে আছি এক অদৃশ্য অণুজীবের কবলে,

নিদানের সব চেষ্টা দেশে দেশে একে একে গ্যাছে বুঝি জলে।

 

জীবনের জীবনী-শক্তি দিনে দিনে হয়ে গেছে হাওয়া

নাঙ্গা তলোয়ার হাতে ঘাতকের অবিরাম ধাওয়া

জনপদে জনে জনে জারি করা রয়েছে হুলিয়া।

 

ভাইরাসের উদ্ধত ফণা ছোবলে ছোবলে বিষ ঢেলে

জীবনকে জড়ালো অমন বিষাক্ত জালে,

আমার সকল অর্জন গ্রাস করে নিলো যেনো অবাধ্য জঞ্জালে।

 

আর্তনাদে আমি পূবের স্বজনের কাছে পেতেছি হাত;

নিজের কুড়োল ঘায়ে তারা নিজেরাই ভারি কুপোকাত,

তাই সে হাতের ভাগ্যে কেবলি জুটেছে বিনা মেঘে বজ্রপাত।

আশা নিয়ে হাত পাতি পশ্চিমে,

সেখানে ভরসা নেই, উষ্ণতা বিলীন হলো মরণের হীমে।

নিরূপায় হাত এরপরও পেতেছি দক্ষিণে,

সেখানেও আততায়ীর খঞ্জর লুকানো নোন্তা ঢেউয়ের আস্তিনে।

উত্তরে হাত পেতে পেয়েছি পরিহাসের বার্তাই কেবল;

 কোন প্রাণের উষ্ণতা দিতে পারে হীমের হিমাচল?

ঊর্ধ্বে পেতেছি হাত মহাশূন্যভেদী পূর্ণতার কাছে,

আর্তি মিলিয়ে যায় অর্তনাদে; পরমের আনাচে কানাচে।

অধ:মুখি হয়ে আকুতি জানাই মাটির মায়ের মায়ার,

মাটির বুকেও তখন অশ্রুবন্যা;

মাতমে বিলাপে তার বুকে হাহাকার।

স্বস্তির বার্তা নেই, পূর্ব-পশ্চিম উচ্চ-তুচ্ছ; সবি একাকার,

আমাকে অভয় দিয়ে বুকে বুক জড়াবার; তুমি ছাড়া কেউ নেই আর।

আমার শিয়রে বসে মমতার হাত বুলিয়ে দাও আমার তপ্ত কপালে,

তোমার সোহাগী ছোঁয়ায় আমার রুগ্ন শরীরে আরোগ্য-আশিস ঢালে।

নাই কোনো বদ্যি বড়ি,চূর্ণ হলো বিজ্ঞানের জারিজুরি— সকল ক্ষমতা,

এখন সঙ্গী কেবল তোমার কোমল পরশ, মা তোমার অতুল মমতা।

তুমি যদি থাকো পাশে তুচ্ছ করে দিতে পারো এসকল নস্যি মারী ও মড়ক,

চাই না অষুধ পথ্য, শুধু চাই মা’কে ;

আমার মা-ই সকল রোগ নিবারক।