চুয়াডাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ঘরে ভালোই দিন কাটছে তাদের

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা:
 | প্রকাশিত : ০৯ মে ২০২২, ১৭:০১

একসময় যে এলাকায় ছিল সুনসান নীরবতা, রাত হলে আশপাশ দিয়ে যেতে সাহস পাইনি কেউ। এখন সন্ধ্যা হতেই চারদিকে আলোর ঝলকানি। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাহাজ উদ্দিনের দোকানে বসে চায়ের চুমুকের সঙ্গে নানা গল্পে ভাঙে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের নীরবতা। কেউ বলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কথা, আবার কেউ শোনান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গল্প। এ নিয়েই মুখরিত হয়ে ওঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা। ভোরের সূর্য উঁকি দিতেই পাখির কিচির-মিচিরে ঘুমভাঙা শিশুদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। নিজের ঘরে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে সকালের সূর্য জানালার ফাঁকে উঁকি দিয়ে গৃহকর্মীর চোখে পড়তেই লাফ দিয়ে ওঠে শুরু করে ঘরের কাজ। বছরের পর বছর রেলস্টেশনে নির্ঘুম রাত কাটানো প্রতিবন্ধী মুন্না এখন নিজের ঘরে আরামে ঘুমিয়ে সকালে বেড়িয়ে পড়েন পেটের তাগিদে। এভাবেই দিন যায়, দিন আসে, আর আগামীর স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর আবাসন প্রকল্পের শিশুরা। তারাই তো আগামীর ভবিষ্যৎ, তারাই গড়বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী উপহারের (নিজের) ঘরে বসে লেখাপড়ায় ব্যস্ত কোমলমতি শিশুরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ২৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৩টি পরিবারকে ওই ঘর উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল জমিসহ ওই ঘরগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সঙ্গে দেয়া হয় জমির দলিল। এককথায় জমিসহ ওই ঘরের মালিক এখন থেকে তারাই। জমিসহ উপহারের ঘর পাওয়া ওই ২৩টি পরিবার এতোদিন অনিশ্চয়তার মাঝে দিন পার করেছে। আশ্রয়হীন টানাপোড়েনের সংসারে কিভাবে তাদের সন্তানদের মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দেবে। তাদের মতো তাদের সন্তানরাও কি সারাজীবন অন্যের জমিতে বসবাস করবে? থাকবে গৃহহীন? এমনই অনিশ্চয়তার মাঝে তাদের মাঝে দূত হয়ে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ঘোষণা দেন, দেশের একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। বর্তমানে তারা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছে।

উপহারের ঘর পাওয়া তাহাজ উদ্দিন (৭০) বলেন, ঠিকমতো চলতে পারি না। রেলবস্তিতে বসবাস করতাম। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পেয়ে খুশি। স্ত্রী নছিমন বেগমকে নিয়ে বর্তমানে তিনি মোমিনপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে আশ্রয়ণের ৬ নম্বর ঘরে বসবাস করছেন। ঠিকমতো চলাফেরা করতে না পারায় আয় রোজগার তেমন নেই। সে কারণে ঘরের সামনে একটি চায়ের দোকান দিয়েছেন। সেখান থেকে প্রতিদিন ১৫০ টাকা থেকে ২শ’ টাকা আয় হয়। তার দুই ছেলে সেলিম ও শামীম তারাও সেখানে একটি করে ঘর পেয়েছে।

প্রতিবন্ধী মুন্নার (৫৫) আশ্রয়স্থল ছিল চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন। এখন প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ঘরে ভালোই আছেন তিনি। মুন্না তার পরিবারকে নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৪ নম্বর ঘরে বসবাস করছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভুইয়া বলেন, মুজিববর্ষে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে জমিসহ ঘর তুলে দেয়ার এ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর দিয়ে স্থায়ী ঠিকানা করে দিচ্ছেন। যা পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও এমন নজির নেই।

(ঢাকাটাইমস/০৯মে/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :