ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’র প্রভাবে উপকূলজুড়ে ভারি বৃষ্টি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১৭:১৬ | প্রকাশিত : ০৯ মে ২০২২, ১৭:১৪

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর প্রভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। আকাশে মেঘাচ্ছন্ন। সোমবার ভোর থেকে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সকাল নয়টায় কলাপাড়ায় ৮০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পায়রা সুমুদ্র বন্দর থেকে ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ১০২০ কিলোমিটার দক্ষিণ- পশ্চিমে এবং মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০২০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিলোমিটার যা দমকা বা ঝরো হাওয়া আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই পটুয়াখালীর পায়রাসহ সব বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। সকল মাছ ধরা ট্রলারসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। অধিকাংশ মাছ ধরা ট্রলার মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য বন্দরের খাপড়াভাঙ্গা নদীতে আশ্রয় নিলেও কিছুসংখ্যক ট্রলার এখনও গভীর সাগরে অবস্থান করছে।

লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, লালুয়া ইউনিয়নের প্রায় আট কিলোমিটার বেরি বাঁধ নাই। জলোচ্ছ্বাস হলে গোটা ইউনিয়নের ধঞ্জুপাড়া, মঞ্জুপাড়া, ১১ নং হাওলা, ছোট ৫ নং, বড় ৫ নং, হাচনাপাড়া, মুন্সীপাড়া, নাওয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, চরচান্দুপাড়া ও চান্দুপাড়া এই ১১টি গ্রামের ফসলি ক্ষেত, পুকুর, ঘের তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

খাপড়াভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলু গাজী বলেন, নিজামপুর ও কমরপুর পয়েন্টে বেরি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস হলে ইউনিয়নের সুধীরপুর, পুরান মহিপুর, নিজামপুর ও কমরপুর এই চার গ্রাম প্লাবিত হবে। এছাড়া এই চার গ্রামে কোনো আশ্রয়ন কেন্দ্র নেই। ফলে এখানের প্রায় ২০ হাজার মানুষ সম্পূর্র্ণ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

ধানখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদার বলেন, নিশান বাড়িয়া বেরি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এখানের বাঁধ ভেঙে গেলে নিশান বাড়িয়া, গন্ডামারি, পাঁচজুনিয়া ও লোন্দা গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাবে।

এদিকে বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকলে এবং ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ উপকূলে আঘাত হানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুগডাল ও বোরো ধান চাষিরা। তবে ক্ষতি কিছুটা কমাতে কৃষকদের আগে ভাগে ধান কেটে ঘর তোলার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আসানির কারণে বোরোচাষিদের ধান কাটার নির্দেশনা দিয়ে এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে, যাতে তাদের এ কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে কোন সমস্যা না হয়।

কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় আসানি আঘাত হানলে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি পরিচালক কলাপাড়া উপজেলা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় আসানি বর্তমানে উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। পায়রা বন্দর থেকে এখন ৯৩৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। এটি মূলত ভারত উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।

(ঢাকাটাইমস/৯মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :