কম তেলে রান্না শিখুন, জীবন দীর্ঘায়ু হবে

প্রকাশ | ১১ মে ২০২২, ১৪:৫৯

সালেহ ইমরান

আমি গ্রামের ছেলে। আমার শৈশব কালে দেখতাম গ্রামের বাজার থেকে শিশি/বোতলে করে তেল কিনতেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা।  তখনকার দিনে এক একটি পরিবার সাপ্তাহিক বাজার থেকে এক ছটাক, দুই ছটাক আবার যারা মোটামুটি  স্বচ্ছল তারা এক পোয়া হিসেবে তেল কিনতেন।

 

এক বাজারের সদাই আরেক বাজার পর্যন্ত নিতে হত মা চাচীদের। এবং গ্রামের স্বচ্ছল কি অস্বচ্ছল প্রতিটি পরিবারেই এই রীতি মেনে চলতেন। কারো ঘরে তেল না থাকলে পাশের ঘর থেকে এক মুখা বা দুই মুখা করে তেল কর্জ করতেন।

 

ঠিক তেমনি পেঁয়াজ বা কাচা মরিচের ক্ষেত্রেও আমাদের মা চাচীরা বলতেন, যা তো অমুকের বাড়ি থেকে এক গন্ডা পেঁয়াজ, কাচামরিচ নিয়ে আয়৷

 

চিন্তা করে দেখুন আগের দিনে যৌথ পরিবারে যে পরিমাণ তেল লাগতো, সেই যৌথ পরিবার ভেংগে একক পরিবারে তার কয়েকগুণ বেশি পরিমাণ তেল লাগছে৷  বলতে পারেন, যুগ পালটে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে।  সেই সঙ্গে বেড়েছে তেলের ব্যবহারও বেড়েছে৷

 

ডিজিটাল যুগে আমরা বিজ্ঞাপনের প্রতি মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত হচ্ছি। স্বচ্ছ সয়াবিন তেলের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন রঙ ফর্সাকারী ফেয়ার এন্ড লাভলি ক্রীমের চেয়েও বেশি আকৃষ্ট করছে৷

 

বলা হয় তেলের ফোটায় ফোটায় পুষ্টি।  আসলেই কি তাই? আর এই ফোটায় ফোটায় পুষ্টি এখন দেশের মানুষের হার্ট এ্যাটাক, হাই প্রেসার, গ্যাস্ট্রিক, ব্লক, স্ট্রোক এর মূল কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

 

আগের দিনে ৯০/১০০ বছর হয়েও কুঁজো হয়ে বেঁচেছিল মানুষ। এখন ৪০ এর আগেই বার্ধক্য। মাসে ৫- ৮ লিটারেও কুলায় না। তাই এসব রোগে  ৪০/৫০ বছর বয়সে বিনা নোটিশ মরছে মানুষ।

 

এবার অন্তত একটু কম তেলে রান্না শিখুন। জীবন দীর্ঘায়ু হবে। শরীর নিরোগ থাকবে। সুস্থ  দেহে সুস্থ জীবন।

 

লেখক: সালেহ ইমরান, পুলিশ কর্মকর্তা