সাতক্ষীরায় কোচিং না করায় শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত
শিক্ষকের কাছে কোচিং না করায় সাতক্ষীরার নলতা আইএইচটি'র শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদককে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। এসময় ওই শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন অংশে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে থেতলিয়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৩ মে) রাত সাড়ে ১০টায় ইনস্টিটিউটের পুরুষ হোস্টেলের ৩১৩ নং রুমে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। রাতে ওই শিক্ষার্থীকে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টায় নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে দেখতে যায় সাতক্ষীরা তিন আসন সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী সোলায়মান হোসেন ম্যাটস শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মোহাম্মদ হানিফের ছেলে এবং আইএইচটির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, রেডিওলজি বিভাগের শিক্ষক সাইদী হাসানের কথামতো রাত ১০টার দিকে শিক্ষার্থী সোলায়মানকে রুম থেকে তুলে নিয়ে যায় কিশোর গ্যাং সদস্য নাহিদ, রশিদ ও রানা। তাদের মধ্যে নাহিদ ও রশিদ আইএইচটির ছাত্র এবং রানা ম্যাটসের ছাত্র।
মারপিটের শিকার শিক্ষার্থী সোলায়মান হোসেন বলেন, শুক্রবার রাত দশটার দিকে ডাইনিংয়ের বিষয়ে কথা বলার জন্য ভবনের চারতলায় মিটিং ডাকে রেডিওলজি বিভাগের নাহিদ। মিটিং শেষে নাহিদ আমাকে বলে তোর সঙ্গে আমার কথা আছে তুই আমার রুমে আয়। আমি নাহিদের রুমে গেলে সে প্রথমে আমাকে তালের রস খাওয়ায়। পরে রশিদ ও নাহিদ আমাকে মারপিট শুরু করে। রানাও তাদের সহযোগিতা করে।
সোলায়মান বলেন, তারা জিআই পাইপ ও লোহার রড দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। একপর্যায়ে আমার মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরলে দেখি রশিদ, নাহিদ ও রানা আমাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে। পরে তারা আমাকে নলতা হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়।
সোলাইমান আরও বলেন, সাইদী হাসান স্যারের কাছে কোচিং না করায় তার নির্দেশে আমাকে মারপিট করা হয়েছে। এর আগে স্যার আমার কাছে বিভিন্ন কারণে টাকা চায়, আমি না দেওয়ায় আমাকে মারা হয়েছে।
অভিযুক্ত রেডিওলজি বিভাগের শিক্ষক সাইদী হাসানের নাম্বারে একাধিক বার কল করলেও তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া য়ায়।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির অধ্যক্ষ মো: ফারুকুজ্জামান বলেন, নির্যাতনের ঘটনাটি সত্য। কলেজে ছোট খাটো এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। সেটি আমরা কলেজ থেকে মীমাংসা করেছি। এটি বড় ঘটনা, এজন্য দ্রুতই তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।
কালিগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, এঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি, তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৪মে/এআর)