যদি আদবের সঙ্গে ভোট চান ভোট পাবেন: ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ মে ২০২২, ১৮:২৩ | প্রকাশিত : ১৪ মে ২০২২, ১৮:০৯

প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী কমিটি করবেন এবং যারা ছাত্রলীগ আছে, যুবলীগ আছে তাদেরকেও বলবেন তারা যেন ভোট যখন আসবে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক না কেন তাকে নিয়ে আপনারা ঘরে ঘরে যাবেন। আপনারা যদি আদবের সঙ্গে ভোট চান আপনারা ভোট পাবেন।’

শনিবার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।

সকাল ১০টা থেকে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা।

এসময় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনে বলতে চাই দক্ষিণ জেলার যে আসনগুলি আছে আগামী সংসদ নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকেই মনোনয়ন দেক না কেন তাকেই আপনারা ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। এটা আমার অনুরোধ। জয়যুক্ত করে আনতে পারবেন তখনই যখন আপনারা তৃণমূলকে সংগঠিত করতে পারবেন। তখন আপনারা তৃণমূল পর্যায়ে দৃঢ়তার সহিত জয় পাবেন। এই প্রতিনিধি সভায় এই মেসেজ দেওয়ার জন্য আমাদের সাধারণ সম্পাদক এসেছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে আপনারা শক্তিশালী কমিটি করবেন।

বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘আমি আমার এলাকায় নয়বার নির্বাচন করছি, সাতবার এমপি হইছি আরও দুইবার হইতাম। হই নাই বিভিন্ন কারণে। তাই আজকে বলতে চাই ভোটে জিতার একমাত্র কৌশল হলো- আমরা সম্মানের সহিত আদবের সহিত মা-বোনের কাছে গিয়ে আমাদের ভোট চাওয়া। আমরা অনেক কাজ করেছি। যারা গৃহহীন তাদের ঘর দিয়েছি। আজকে সারা বাংলাদেশ আলোকিত হয়েছে কার অবদান? শেখ হাসিনার অবদান। আমি শুধু বলবো আপনাদের মেসেজ দেওয়ার জন্য যে আপনারা প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী কমিটি গঠন করবেন। আপনারা ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করবেন। যেটা আমরা উত্তর জেলায় করি। দক্ষিণ জেলায় শক্তিশালী কমিটি থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না। আমি এটা বিশ্বাস করি যে ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের কর্মী আছে, বঙ্গবন্ধুর কর্মী আছে, সেখানে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীকে পরাজিত করা সম্ভব হবে না। তাই আমার বিশ্বাস আপনারা একমাসের মধ্যে ওয়ার্ড কমিটি, থানা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন করবেন।’

প্রধান বক্তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবেনা। শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসের অভিজ্ঞতা আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিজ্ঞতা এক নয়। শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, দৃঢ় নেতৃত্ব বাংলাদেশকে আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। শ্রীলঙ্কার আজকের পরিণতির জন্য তাদের ব্যর্থতা দায়ী। কেননা তারা তাদের সক্ষমতার চেয়ে বহু বেশি ঋণ করেছিলেন। তারা তাদের ঋণের বোঝা এতোই বাড়িয়েছেন যে তা বহন করা সম্ভব ছিলো না।’

‘এছাড়াও তাদের জিডিপির অন্যতম উৎস পর্যটন। করোনাকালীন সময়ে সেদেশে কেউ ভ্রমণে যায়নি, তাই তাদের জিডিপিতে ধস নামে। আরও একটি কারণ রয়েছে তা হলো শ্রীলঙ্কা তাদের দেশে অর্গানিক ফসল উৎপাদন করতে চেয়েছিল। অর্থাৎ ফসল উৎপাদন করবে কিন্তু সার, কিটনাশক কোন কিছু ব্যবহার করা হবে না। তাই তাদের খাদ্য ঘাটতি দেয়া হয়। এতে করে সেদেশে অর্থনীতি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। শূণ্যের কোটায় নেমে যায় অর্থনীতি। আমাদের দেশে সেরকম কিছু নেই। আমাদের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ।’

হানিফ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের কৃষিখাত আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে। করোনাকালেও আমাদের প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। যারা এসব কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়, তারা চায় সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে। কেননা ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামানো সম্ভব নয়। তাই ষড়যন্ত্র আর অপপ্রচারের মাধ্যমে তারা সেটি করতে চায়।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সরকার যখন পদ্মা সেতু করছিল, তখন বিএনপি দেশে গুজব ছড়িয়ে ছিলো যে পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে। এ বলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। তারা গুজব ছড়ায় ছেলেধরা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে অনেক নিরীহ মানুষ মারা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যখন ভারত থেকে করোনা টিকা নিয়ে আসে, তখন দেশের মানুষকে দেয়া শুরু করলো। তখন বিএনপি গুজব ছড়ালো টিকা কাজ করে না। রিজভী সাহেব বক্তব্য দিলেন, আমাদের করোনা টিকা অকেজো। পরে তিনি লুকিয়ে টিকা নিয়েছিলেন। আমাদের চট্টগ্রামের ডা. জাফরুল্লাহও বলেছিলেন টিকা নিয়ে। পরে তিনিও লজ্জা ভেঙে টিকা নেন এবং বলেন, আমার আরাম লাগছে ‘

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা শ্রীলঙ্কার তুলনা বাংলাদেশে দেয়, তারা অনেক আগেই শ্রীলঙ্কার মতো পালিয়েছিলেন। কেননা আজকের শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিতে তারাও পড়েছিলেন। তাই তারা এসব কথা বলছেন। তারেক জিয়া বাংলাদেশে মুচলেকা দিয়ে আর রাজনীতি করবে না বলে চলে গিয়েছিল। কিন্তু এখনও রাজনীতি করছে। তাদের যদি লজ্জা থাকে। তাহলে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবে।’

এ প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। অতিথি ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগ অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, আওয়ামী লীগ দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগ কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আওয়ামী লীগ উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৪মে/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :