আনিসুজ্জামান: স্মৃতি-তর্পণ

প্রকাশ | ১৪ মে ২০২২, ২০:৩৮ | আপডেট: ১৪ মে ২০২২, ২০:৪২

শারফিন শাহ

জীবনের পরিমণ্ডলে আমরা যেসব মানুষের সংসর্গে আসি, তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের সুপ্ত চেতনার পাষাণ ঠুকে ঠুকে রঙ-বেরঙের ক্ষণদ্যুতি উদ্দীপ্ত করে। সেই ক্ষণিকের দুত্যিময়তায় আমরা নবোদ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠি। সবরকম জরা-জীর্ণতা, আলস্য, কর্মকুণ্ঠা, কুসংস্কার দূরে ঠেলে সত্য, সুন্দর, আর শুভবোধের মন্ত্রণায় চালিত হই। কখনো অপ্রত্যাশিত চিন্তাধারা জীবনপ্রবাহে যুক্ত হয়ে বিচিত্র মত ও পথের সৃষ্টি করে। সেইসব মত ও পথের অমৃতময় রূপেই মুক্তির সন্ধান পায় গোটা  জাতি। 

বাঙালি জীবনে আনিসুজ্জামান এমনই এক রেডিয়াম, যিনি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম, সাংস্কৃতিক সংগ্রাম, সাহিত্যিক সংগ্রামের অন্যতম উদ্দীপক।তাঁর জ্ঞানচর্চার স্ফুলিঙ্গরাশিতে কেটে গেছে আমাদের তিমিরকাল, তাঁর নির্দেশিত মানবতাবাদী চেতনায় স্থাপিত হয়েছে আমাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মপরিধি, তিনিই দেখিয়েছেন পরমতসহিঞ্চুতা বজায় রেখে কীভাবে তুলে আনা যায় অহিংস মতাদর্শ।রাজনৈতিক বাজারে বিক্রীত বু্দ্ধিজীবী, পদলেহী মোসাহেবি শিক্ষক, মেরুদণ্ডহীন সাহিত্যিকদের ভিড়ে তিনি ছিলেন অনন্য এক ব্যক্তিত্ব। কোনো বৈষয়িক মোহনমায়া আমৃত্যু তাঁকে আপন কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি।তাঁর সম্মোহনী নিরাভরণ জীবনাচারের কাছে পরাজিত হয়েছে ক্ষমতাবানদের সকল আস্ফালন।মানুষের প্রতি অগাধ বিশ্বাস, পূর্বপূরুষদের ভাণ্ডার থেকে আহরিত জ্ঞানই ছিল তাঁর জীবনীশক্তির মূলসূত্র। তিনি পুঁথিগত বিদ্যার্জনেই ক্ষান্ত হননি, মানবকল্যাণে সেই বিদ্যার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন নান্দনিকভাবে।

আনিস স্যারের সাথে আমার প্রথম দেখা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে। তখন আমি সদ্য ভর্তির টিকিট নিয়ে স্বপ্ন ঝলমমল চোখে ঐতিহাসিক এই বিদ্যাপিঠের আনাচে-কানাচে ঘুরে ফিরছি।একদিন দেখি শ্বেতশুভ্র পোশাকে স্নিগ্ধ একজন ব্যক্তি অনেকেরই দৃষ্টি কেড়ে লিফটে উঠছেন। আমি গিয়ে সালাম দিয়ে তাঁর সামনে দাঁড়ালাম। তিনি সালামের উত্তর দিয়ে বললেন,‘উপরে যেতে চাইলে লিফটে উঠতে পার।’ দেখলাম, লিফট খালি, তবু শিক্ষকদের লিফটে আমার মতো এক কচি ছাত্রের ওঠা নিয়ে ধন্দে পড়ে গেলাম। কিন্তু স্যারের সাথে একটুখানি সময় কাটানোর লোভেই ঝট করে লিফটে উঠে গেলাম। স্যার তাঁর স্বভাবসুলভ মেদবর্জিত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন,‘কী বিষয়ে পড়?’ বললাম-‘স্যার, অ্যানথ্রোপলজি।’ স্যার বললেন,‘অ্যানথ্রোপলজির বাংলা কী?’ আমি বললাম,‘নৃবিজ্ঞান স্যার।’ স্যার বললেন, ‘বাঙালির সাথে কথা বলার সময় বাংলাটাই বলবে। এতে বাংলা পরিভাষাটার বিস্তৃতি ঘটবে।’

লিফট পেরিয়ে আমি স্যারের সাথে হাঁটা ধরলাম। জিজ্ঞেস করলাম, ‘স্যার, আপনার ‘কাল নিরবধি’ পড়ে অনেক কিছু জেনেছি।’

স্যার বললেন,‘কী জানলে?’

আমি বললাম-‘ওই যে, আপনি কত সরল গদ্যে আপনার জীবনের নানা পর্ব এঁকেছেন সেসব জেনে সত্যি অনুপ্রাণিত হয়েছি।কীভাবে এত চমৎকারভাবে খুঁটিনাটি তুলে ধরতে পারলেন?’

স্যার বললেন, ‘সে অনেক কথা। আমার তো এখন এত সময় নেই। পরে একদিন এসো, আলাপ করা যাবে।শুধু এইটুকু বলি, কোনো আত্মজীবনী পড়ার সময় ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করবে, কারণ, খুব কম আত্মজীবনীতেই সঠিক ইতিহাস থাকে।’

আমি বললাম-‘কিন্তু স্যার, আপনার আত্মজীবনী পড়ে মনে হয়েছে, আপনি সঠিকভাবেই তুলে এনেছেন সেই সময়ের সমাজ ও মানুষের ইতিহাস।’

স্যার বললেন-‘আমি তো উপন্যাস, গল্প লিখতে ব্যর্থ হয়েছি।তাই আত্মজীবনীই অনেকটা গল্পচ্ছলে বলার চেষ্টা করেছি। লেখার সময় ভুল হয়নি তা না, অনেকেই ভুল ধরে চিঠি দিয়েছেন। আমি সংশোধন করে নিয়েছি। তবে হ্যাঁ, আমার জ্ঞানত, কোন ভুল তথ্য জুড়ে দিইনি। একটা ঐতিহাসিক ভুল অনেক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।’

আমার ঝুলিতে অফুরন্ত সময় থাকলেও সেদিন স্যারের তাড়া থাকায় আলাপের ইতি টানতে হলো এখানেই। এরপর স্যারের সাথে বহুবার দেখা হয়েছে।বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর সংক্ষিপ্ত অথচ সুমিত বক্তব্য শুনতে শুনতে মনে হয়েছে, খুব গভীর জীবনবোধ না থাকলে এভাবে বলা যায় না। তিনি নিজে তো বলছেনই, পাশাপাশি আমন্ত্রিত আরও যারা আছেন তাদেরও কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করছেন। তাঁর সব বক্তৃতাতেই অনুজদের ক্ষেত্রে ‘প্রীতিভাজন’ শব্দটির প্রয়োগ করতে দেখেছি, প্রীতি ছড়াতে ভালোবাসতেন বলেই হয়তো এমন সম্বোধন বেছে নিয়েছিলেন। মনে পড়ে, ২০১৭ সালের কথা। জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে ‘জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক গুণীজন বক্তৃতামালা’র বক্তা হিসেবে তিনি কী স্বতোজাতরূপে আবির্ভূত হলেন।উপস্থিত শ্রোতাদের নিজের পঠিত বিষয়ের ভেতর টেনে নিয়ে পিতনপতন নীরবতায় সার্থক করে তুললেন পুরোটা সময়। একজন জাত পণ্ডিত আনিসুজ্জামানকে আবিষ্কার করেছিলাম সেদিন। ক্ষণিকের জন্যে মনে হয়েছিল, কে বলে আমাদের বিশ্বমানের জ্ঞানসাধক নেই, আমাদের আনিস স্যার আছেন।‘বাংলার মুসলমানের পরিচয়-বৈচিত্র্য’ বিষয়ের ওপর স্যারের সেই বক্তৃতার অনুলিপি এখনো আমার সংগ্রহে আছে। সাথে স্যারের অটোগ্রাফ। মাঝেমধ্যে পড়ি আর স্যারকে স্মরণ করি।

স্যারের সঙ্গে সর্বশেষ দেখা হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে একটি সংকলনের লেখা সংগ্রহ করতে গিয়ে আরও কাছাকাছি আসার সুযোগ ঘটে।আমি লেখার জন্য স্যারের বাসায় গেলে তিনি আধ ঘণ্টার মতো সময় দিয়েছিলেন।নানা বিষয়ে আলাপ হয়েছিল তাঁর সাথে। স্যার আবেগদীপ্ত সুরে বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবনের কথা।আমার মতো তরুণের হাতে সংকলনটির সম্পাদনাভার অর্পিত হয়েছে শুনে তিনি আনন্দিত হয়েছিলেন। সাথে সতর্কবাণী ছুঁড়েছিলেন এই বলে যে, ‘কোন তথ্যগত বিভ্রান্তি যাতে না থাকে, মনে রাখবে, এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, সকল ক্ষেত্রেই পথ দেখিয়েছে। যতই মান পড়ার প্রশ্ন উঠুক না কেন, এর জায়গাটা ঐতিহাসিকভাবে সুনির্দিষ্ট।’ আমি স্যারের কথা রাখার চেষ্টা করেছিলাম। মুদ্রণপ্রমাদজনিত কিছু ভুল বাদে আর কোনো তথ্যগত বিভ্রান্তি সংকলনটিতে নেই। এজন্য এটি একটি দলিল হিসেবে পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে।

স্যারের বাসায় ওইদিনের কাটানো মুহুর্তগুলো আজও স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে। শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অনেক কথাই উঠেছিল। তিনি সখেদে বলেছিলেন, ‘আমাদের রাজনীতি সাম্প্রদায়িকতার সাথে গলাগলি ধরে চলছে, শিক্ষায় তার প্রভাব পড়েছে। যারা শিক্ষিত হচ্ছে তারা কর্মক্ষেত্রে উন্নতি ঠিকই করছে, কিন্তু মনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা কুসংস্কারের ফলে বিদ্যাচর্চায় উদ্যোগী হতে পারছে না। পঁচাত্তরের পর যখন রাষ্ট্রধর্ম করা হলো ইসলাম, তখন থেকেই সংকট শুরু।রাষ্ট্রধর্ম তো এর আগে ছিলনা, জনগণও চায়নি, ক্ষমতাবানরা নিজেরাই বসিয়ে দিয়েছেন।পরে তা বিপুলসংখ্যক মানুষকে একমুখী করে নিল।এটা খুব ক্ষতি করেছে । রাজনীতি তো বটেই, শিক্ষাক্ষেত্রেও।’

আমি বললাম,‘স্যার, এর থেকে উত্তরণের উপায় কী? কোনো পথই কী খোলা নেই?’

স্যার বললেন,‘সংকট আগেও ছিল। সব সময়ই সুসময় এটা বলা যায়না। আদিম সমাজেও গোত্রগত সংঘাত ছিল, নৃবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে তা তোমার জানার কথা।সংকটের মধ্যে দিয়েও ভালো কিছু হচ্ছে।এই যে এত মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে, এটা কী ভাবা যেতো এক সময়? ১৯৪৮ সালে কোনো মেয়ে যদি বের হতো তাকে রিকশায় কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হতো, যাতে কেউ না দেখে।আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তখন ছাত্রীসংখ্যা ছিল খুবই কম, কোনো ছাত্রী কোনো ছাত্রের সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলবে এমনটা ভাবাই যেতো না। কথা বলতে হলে প্রক্টরের অনুমতি নিতে হতো। এখন তো আর সেই পরিবেশ নেই। মেয়েরা কতো ভালো করছে, তারা বাইরে বেরিয়ে এসেছে, নিজে উপার্জন করে সংসারে তো ব্যয় করছেই, নিজের শাড়ি, চুড়ি, টিপ কেনার সামর্থ্যও লাভ করছে। হ্যাঁ, বলতে পার, বোরকা পরিহিতা মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে, তারাও কিন্তু পড়াশোনা করছে, চাকরি করছে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছে। এটা কিন্তু একটা বড় উন্নতির দিক।’

জিজ্ঞেস করলাম, ‘স্যার, আপনি তো বিদেশে পড়ালেখা ও গবেষণা করেছেন।আমাদের সাথে তাদের কী ধরনের পার্থক্য অনুভব করলেন? আমরা ঠিক কতখানি পিছিয়ে?’

স্যার বললেন,‘পার্থক্য পড়ানোর ক্ষেত্রে তেমন নেই। কিন্তু সিলেবাসের ক্ষেত্রে বিস্তর ব্যবধান। তাদের ভাষার ওপর জোর বেশি। আর সংস্কৃতি বিষয়ক কোর্স সব বিভাগেই রয়েছে। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার এক বন্ধু ছিল, তার রুমে আমি দেখেছিলাম সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের পোস্টার, সে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক, অথচ ছাত্রছাত্রীদের চলচ্চিত্রও পড়াচ্ছে, তাও আবার ভারতীয় চলচ্চিত্র। আমাদের সেরকম হলে তো অভিযোগ উঠবে, সিলেবাসের বাইরে পড়ানো হচ্ছে। ওখানে কালচারাল স্টাডিজ ‍গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ইতিহাস, দর্শন, নৃবিজ্ঞান, সাহিত্যের কোর্স থাকবেই। আমরা যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে এসব ঢুকাতে যেতো তবে উচ্চশিক্ষা পরিপূর্ণ হতো।’

স্যার নিজের শিক্ষকদের কথাও স্মরণ করলেন। মুনীর চৌধুরীর স্মৃতিচারণ করে বললেন, ‘তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।বাংলা, ইংরেজি দুই ভাষাতেই সমান পারদর্শী ছিলেন। প্রথাবদ্ধ সিলেবাসের বাইরে প্রচুর পড়তেন ও পড়াতেন। যেখানে ভালো কিছু দেখতেন তা ছাত্রছাত্রীদের সামনে নিয়ে আসতেন। রণেশ দাশগুপ্তের ‘উপন্যাসের শিল্পরূপ’ বইটি তিনিই নিজের প্রচেষ্টায় বাংলা বিভাগের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এখন তাঁর মতো কাউকে দেখি না। শিক্ষকদের অনেকেই প্রস্তুতি না নিয়েই শিক্ষকতায় প্র্রবেশ করে, কোনো নির্ধারিত লক্ষ্যও থাকে না।এ জন্যই ছাত্রদের কাছে, সমাজের কাছে শিক্ষকদের মূল্য কমেছে।এটা খুব আক্ষেপের বিষয়।’

এরই মধ্যে স্যারের জন্য অপেক্ষমান ছিলেন আরও অনেকেই। সুতরাং আর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হলো না। স্যার বিদায় জানিয়ে বললেন, ‘সংকলনটা বের হলে আমাকে দিও।’আমি দিয়েছিলাম। তিনি নেড়েচেড়ে দেখে বলেছিলেন, ‘খুব শ্রমসাধ্য কাজ। তোমার দ্বারা আরও এরূপ কাজ সম্ভব হবে।ধরে রেখো এই স্পৃহা।’

আমি সংকুচিত হয়ে মাথা নমিত করে বলেছিলাম,‘স্যার, আপনার আশীর্বাদ আমার জন্য বরাদ্দ রাখবেন সবসময়। চেষ্টা করব আপনার স্নেহের মূল্য রাখার।’

এরপরই পৃথিবী জুড়ে নেমে এলো মৃত্যুময় করোনাকাল। মুহূর্তেই বদলে গেল সবকিছু। এই প্রাণঘাতী মহামারি কেড়ে নিল কত স্বপ্ন, কত প্রেম, কতো মানুষের সোনালি ভবিষ্যত। বাঁচানো গেল না আনিসুজ্জামান স্যারকেও। তিনিও চলে গেলেন অনন্তের পথে। আমরা হারালাম একজন কালের সাক্ষী, বিদগ্ধজনকে। যিনি তাঁর জীবনটা উৎসর্গ করেছিলেন বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির সাধনায়।আর সবকিছু ছাপিয়ে তিনি শিক্ষকই হতে চেয়েছিলেন এবং সেটা তিনি হতে পেরেছিলেন পরিপূর্ণভাবে। এ জন্যেই তাঁর দৈহিক প্রস্থান ঘটলেও তিনি আছেন বাঙালির সত্তাজুড়ে।

উপনিষদে কথিত আছে, যিনি এক তিনি বললেন, আমি বহু হব। সৃষ্টির মূলে এই আত্মবিসর্জনের ইচ্ছা।আনিসুজ্জামান স্যারের সৃষ্টির ইচ্ছাও সেই রীতি অনুসরণ করেছে। তিনি তাঁর ছাত্রদের মধ্যে বহু হয়েছেন। নিজের হৃদয়কে সঞ্জীবিত করেছেন বহু হৃদয়ের মধ্যে। এই যে আত্মদানমূলক সৃষ্টিশক্তি, নিজেকে অকৃপণভাবে বিলিয়ে না দিলে তা সম্ভব হতো না। স্যারের এই মহিমা কখনোই জরাগ্রস্ত হবেনা।তিনি কালান্তরে আরও সবুজ আরও নবোন্মেষশালিনী বুদ্ধির মধ্যে দিয়ে প্রসারিত হবেন। কারণ তিনি তাঁর জগৎ নির্মাণ করেছিলেন প্রীতি দিয়ে, পাথর দিয়ে নয়।

লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক