বিএটিবিসি থেকে সরকারের ১০ শতাংশ শেয়ার বিক্রির আহ্বান

প্রকাশ | ১৪ মে ২০২২, ২২:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

তামাকমুক্ত দেশ গড়তে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড (বিএটিবিসি) থেকে সরকারের ১০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান।

শনিবার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমন্বিত পল্লী উন্নয়ন কেন্দ্রে (সিরড্যাপ) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।

কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, একদিকে বলছি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আর অন্যদিকে তামাক চাষকে উৎসাহিত করা হচ্ছে শুল্ক উঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। তামাক চাষকৃত এলাকায় বাচ্চা নারীদের অবস্থা ভালো না। তাদের বয়স ৪০ হলে দেখা যায় ৭০ বছর বয়স্ক। তো বলা যায়, প্রধানমন্ত্রীর লক্ষের পথে আমরা হাঁটছি না। তামাক আইন প্রণয়নে প্রধানমন্ত্রীর নীতি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে হবে। বিএটিবিসি থেকে সরকারের শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হলে বুঝা যাবে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী একমাত্র সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। তিনি বললে সব হয়ে যায়। তেতুঁলতলা মাঠ হচ্ছে তার বাস্তব উদাহরণ। তাই আমাদের সবার আন্দোলন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আন্দোলনের কথা পৌঁছাতে হবে।

‘একদল লোক আছে যারা বিএটিবিসির সঙ্গে মিটিংয়ে বসে ডলারের বিনিময়ে তাদের পক্ষে কাজ করে। তারপর আছে ব্যবসার স্বার্থ। তাদের বিরুদ্ধে কিছু বললেই ব্যবসায়ীরা সব এক হয়ে সমর্থন করে মুনাফার জন্য। তারা অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিলে বসে। অন্য ব্যবসায়ীরা তাদের সাথে বসতে দিচ্ছে কেন?’—প্রশ্ন রাখেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান।

সেমিনারে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম এ  মজিদ বলেন, শুধু কর আরোপ করে পুরোপুরি সমাধান হবে না। এনবিআর থেকে আগে থেকেই চেষ্টা করেছি। একদিকে দাম বাড়ালে অন্যদিকে দেখা যায় গুল খাওয়া শুরু হয়ে যায়। তাই শুধু ট্যাক্স বাড়িয়েই তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। তবে এটা বলতে পারি ট্যাক্স বাড়ানো একটা উপায় কিন্তু একমাত্র উপায় না। এক্ষেত্রে সরকারের নিজের পলিটিক্যাল হস্তক্ষেপ থাকতে হবে। কেউ রাজনৈতিক ইশতেহারে কিন্তু বিএটিবিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয় এমন কোনো বিষয় রাখেন না। আমাদের সবার এক হয়ে তামাকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তবে এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে যে চোরাকারবারি দমনের চেয়ারম্যান নিজেই কিন্তু বড় চোরাকারবারি হন, তাই তাদের অর্থের উৎসও দেখতে হবে।

এনবিআরের আরেক সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে বারবার শুধু সেমিনার আর ওয়ার্কশপই হচ্ছে। আমার করা একটা গবেষণায় দেখেছি এক বছরে বিএটিবিসি ৪ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। কীভাবে তারা সরকারের সঙ্গে থেকে সরকারকেই রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তা কি হুঁশ নেই? তামাক ব্যবহারে শিল্প মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য বহু মন্ত্রণালয় এদের প্রমোট করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিবও বিএটিবিসির ১০ শতাংশ শেয়ারে আছে। কিন্তু কেন? আর অর্থমন্ত্রীর কথা কিছুই বলব না। একজন ব্যবসায়ী যখন মন্ত্রী হয় তখব কী হয় তা আপনারাই ভালো জানেন। তার নিজেরও ব্যবসায়িক একটা স্বার্থ থেকেই যায়।

(ঢাকাটাইমস/১৪মে/বিএস/ইএস)