ভালো মন্দ বিবেচনায় নিয়ে সতর্ক হতে হবে ফেসবুক ব্যবহারে

সাফা আক্তার নোলক
 | প্রকাশিত : ১৫ মে ২০২২, ১৫:২৮

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের জনপ্রিয়তা এখন আকাশছোঁয়া। বিশ্বজুড়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে পড়েছে প্রভাব। ফেসবুক আমাদের অনেক মূল্যবান সময় যেমন কেড়ে নিচ্ছে তেমনি অনেক সম্পর্কও নষ্ট হচ্ছে এই সামাজিক মাধ্যমটির কারণে।

দেখা যাচ্ছে, আমাদের যেসময়টা প্রকৃতির মুগ্ধতায় আবিষ্ট হয়ে থাকা কিংবা আপনজনদের সঙ্গে সময় কাটানোর কথা— ঠিক সেই সময়ে আমরা ডুবে থাকছি যন্ত্রনির্ভর সামাজিকতায়! এর ফলশ্রুতিতে আমাদের চারপাশে তৈরি হচ্ছে এক কৃত্রিম ঘনিষ্ঠতা, চলে যাচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই প্লাটফর্মটির আসল উদ্দেশ্য ভাবমূর্তি আদানপ্রদান করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বললেই চলে। বদলে যাওয়া বাস্তবতার সঙ্গে এটির অতিব্যবহারে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই যথেচ্ছাচারী হয়ে উঠছে। বাড়ছে বিচ্ছিন্নতাবোধ, অসহিষ্ণুতার মতো ঘটনা।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষের হিসাবে তাদের বাৎসরিক আয় প্রায় ৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাদের এই আয়ের পেছনে ব্যয় হচ্ছে কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর মস্তিষ্ক। বর্তমানে ফেসবুকের ব্যবহারকারী ২৫০ মিলিয়নের বেশি।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ফেসবুক আত্মসম্মান বোধের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাছাড়া এর ফলে নষ্ট হচ্ছে সময়, তৈরি হচ্ছে বিষন্নতা, মানুষ ডুবে যাচ্ছে হতাশায়। পরশ্রীকাতর হয়ে উঠছে মানুষ।

এর বাইরে ফেসবুকে নানারকম ভ্রান্ত ধারণা, গুজবের ফলে তৈরি হচ্ছে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মানুষ। এমনকি এসব কারণে ফেসবুককে বেশ কয়েকটি দেশে আইনি জটিলতার মুখেও পড়তে হচ্ছে।

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গের এক সহপাঠীই অভিযোগ তুলেছিলেন, ফেসবুক তাদের সোর্স কোড ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া ফেসবুক তৈরি করে দিচ্ছে এক প্রকার আসক্তি। তৈরি হচ্ছে শারীরিক সমস্যার। অবক্ষয় হচ্ছে সামাজিক দক্ষতার। এসব কারণে সৃষ্ট একাকীত্ব ব্যক্তি জীবনে সৃষ্টি করছে করছে নানারকম অসঙ্গতির।

প্রযুক্তির প্রযোজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতায় অনেক উন্নতির সঙ্গে অবক্ষয় হচ্ছে নৈতিকতার। তাই ফেকবুক ব্যবহারের ভালো ও মন্দ দিক নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই ভালো মন্দ নির্ভর করে ব্যবহারকারীর ওপর। এটির ভালো কাজে ব্যবহার সকলের জন্যই মঙ্গলজনক হবে। ফেসবুক তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সর্বোত্তম ইতিবাচক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই আমাদের জাতীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে ফেসবুক ঘিরে বিভিন্ন অবাঞ্ছিত ঘটনা রোধ করতে পারব।

লেখক: শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন

মুক্তমত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা