বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণ করেছেন শেখ হাসিনা

প্রকাশ | ১৫ মে ২০২২, ১৮:৫৮ | আপডেট: ১৫ মে ২০২২, ২১:১৬

মোস্তাকিম আহমেদ, জবি প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দেশ যে অবস্থায় চলে গিয়েছিল তা থেকে উদ্ধার করে দেশকে পুনর্নিামাণ করেছেন শেখ হাসিনা। তলাবিহীন ঝুঁড়ি থেকে বাংলাদেশকে পরিপূর্ণ ঝুঁড়িতে পরিণত করেছেন তিনি।

রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হল রুমে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: ইতিহাসের পুনর্নির্মাণ’ শীর্ষক সেমিনার এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের সেই সময়টা আমাদের ইতিহাসে সবসময়ই কাটা দাঁগের মতো লেগে থাকবে। আমরা যখন বিদেশে যেতাম, সবাই এক কথাই বলতো, তোমরা সেই জাতি যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে? এসব শুনে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যেত। সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিয়েছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।’

বঙ্গবন্ধু-কন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণা করে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘যেদিন তিনি দেশে ফিরেন, লাখো মানুষের ঢল নেমেছিল। সেদিন ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল, মনে হলো প্রকৃতিও হয়তো বঙ্গবন্ধু-কন্যাকে স্বাগত জানাতে এসেছে। সেদিনই তিনি (শেখ হাসিনা) ঠিক করে নিয়েছিলেন কীভাবে তিনি দেশের অবস্থাটা পরিবর্তন করবেন।

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার যিনি করেছিলেন তিনি আর কেউ নন, তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনা।’ বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ‘এখন আমাদের মনে একটু প্রশান্তি জাগে আমরা তাদের হত্যার বিচার করতে পেরেছি। এখন আমরা বিদেশে গেলেও বলতে পারি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আমরা করতে পারি ।

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন যদি ক্ষমতায় আসেন তাহলে বাংলাদেশকে বদলে দেবেন। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যে অসমাপ্ত কাজগুলো রেখে গিয়েছিলেন সে সময়, শেখ হাসিনা নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তা বাস্তবায়ন শুরু করেন। তলাবিহীন ঝুঁড়ি থেকে বাংলাদেশকে আজকে পরিপূর্ণ ঝুঁড়িতে পরিণত করেছেন। আমরা সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে পরিণত হয়েছি। তিনিই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সাহস দিয়েছেন।’

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানে সভাপতিত্বে সেমিনারের শুরুতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।

স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন জরুরি ছিল। তিনি দেশে ফিরেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে, একনায়তন্ত্রের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুদ্ধ করেন। 

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পরে উগ্র ধর্মবাদকে ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কে দিয়ে তাদের রাজনীতি করার অধিকার দিয়ে রাষ্ট্রটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে যোজন যোজন দূরে নিয়ে যাওয়া হলো।  সেখানে থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণ করলেন।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে একটি স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান দেশে এসেছিলেন। কিন্তু ১৭ মে যখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসেন, তিনি কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে আসেননি। আমি মনে করি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এটা স্বাধীন বাংলাদেশ ছিল না। এটা পূর্ব পাকিস্তান ছিল। সেই অবস্থা থেকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণ করেছেন।

সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি গাইবান্ধা-৪ আসনের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ আজম, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু ।

সেমিনারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৫মে/মোআ)