১০ হাজার টাকায় করোনা সনদ দিতেন তারা

প্রকাশ | ১৫ মে ২০২২, ২১:০৬

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিদেশগামী যাত্রীদের ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে করোনা নেগেটিভ সনদ বিক্রি করে আসছে একটি চক্র। প্রথমে এই চক্রের সদস্যরা বিদেশগামীদের কাছে নিজেদের কোভিড-১৯ হাসপাতালের চিকিৎসক, স্টাফ ও নার্স পরিচয় দিয়ে তাদের বিশ্বস্ততা অর্জন করতো। পরবর্তী সময়ে যাত্রীদের করোনার ভুয়া সনদ দিয়ে হাতিয়ে নিতো মোটা অঙ্কের টাকা।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বনানী থেকে করোনার সনদ প্রতারণা চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

রবিবার রাজধানীর উত্তরা র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— জসিম উদ্দিন, মো. তারেকুল ইসলাম, মো. আলমগীর হোসেন, মো. রিপন মিয়া, মো. আরিফুল ইসলাম  ও আহম্মেদ হোসেন শাহাদাৎ ও মো. শামীম হোসেন। এসময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া কোভিড-১৯ টেস্টের পজেটিভ ও নেগেটিভ সনদের ফটোকপি, বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদানে ব্যবহৃত দুটি সিমকার্ড, প্রবাসীদের তিনটি মোবাইল নম্বর সংবলিত টোকেন, একটি পেনড্রাইভ (যার মধ্যে আসামিদের চিকিৎসক, স্টাফ ও নার্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণামূলক কথোপকথন রেকর্ডিং সংরক্ষিত রয়েছে), প্রতারণার নগদ ৪১ হাজার ৮৬৯ টাকা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম কার্ড এবং আটটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিদেশগামী সাধারণ যাত্রীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার নেগেটিভ সনদপত্র একটি আবশ্যিক বিষয়। যেসব বিদেশগামী যাত্রী কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ দেখাতে পারবেন না বিদেশযাত্রায় তাদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বিদেশগামী সাধারণ যাত্রীদের এ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটি প্রতারক চক্র বেশ কিছুদিন ধরে বিদেশগামীদের জিম্মি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এ বিষয়ে র‌্যাব-১ প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সঙ্গে ছায়া-তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মহাখালী কোভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে বিদেশগামী যাত্রীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে প্রতারক চক্রের কয়েকজন সদস্য অবস্থান করছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, বিদেশগামী যাত্রীদের জিম্মি করে করোনার সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের কথা বলে বিভিন্নভাবে তাদের প্রলুব্ধ করা হতো। এরপর প্রতারণামূলকভাবে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো চক্রটি। গত কয়েক মাসে চক্রটি বিদেশগামী যাত্রীদের কাছ থেকে এভাবেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে একে অন্যের সহযোগিতায় রাজধানীর বনানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিদেশগামী যাত্রীদের কোভিড-১৯ এর সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের কথা বলে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে তাদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৫মে/এএ/আরকেএইচ)