নাড়ি ছিঁড়ে টয়লেটের পাইপে ঢুকে যায় নবজাতক: তদন্ত প্রতিবেদন

প্রকাশ | ১৬ মে ২০২২, ১৭:৪৫

বরিশাল ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের টয়লেটে বাচ্চা প্রসবের পর সেই বাচ্চা টয়লেটে আটকে পড়ার পর উদ্ধারের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পরিচালকের দপ্তরে।

সোমবার দুপুরে হাসপাতাল পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলামের কাছে এক পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, টয়লেটের প্যানের সঙ্গে পাইপ সরাসরি যুক্ত ছিল। কোনো বাঁকা লাইন হয়ে পাইপের সঙ্গে যুক্ত হলে বাচ্চাটি পড়ে যাওয়ার পর প্রাণহানির শংকা থাকতো। কিন্তু পাইপটি সরাসরি টয়লেটের প্যানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সরাসরি পাইপের মধ্যে পড়ে গেছে বাচ্চাটি। তাছাড়া বাচ্চাটির ওজন ছিল এক কেজি ৩শ গ্রাম এবং আকারেও ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট। যে কারণে সহজেই টয়লেটের পাইপের মধে্য পড়ে গেছে। বাচ্চার মায়ের প্রসব যন্ত্রণার মধ্যে মল ত্যাগের বেগ পেলে তিনি টয়লেটে যান। মলত্যাগের জন্য টয়লেটে গেলেও তিনি মলত্যাগ করেননি, বরং বাচ্চা প্রসব করেছেন। প্রথমে বিষয়টি তিনি টের পাননি। আর তাছাড়া বাচ্চার নাড়িটি স্বাভাবিকভাবেই ছিঁড়ে গেছে এমনটাই উঠে এসেছে তদন্তে।

তদন্ত কমিটির সভাপতি বরিশাল শেরই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. মুজিবুর রহমান তালুকদার বলেন, তদন্তে উঠে এসেছে ৪৭ মিনিটের মতো বাচ্চাটি টয়লেটের পাইপের মধ্যে আটকা ছিল। মেডিকেল সায়েন্সে এ রকম ঘটনার নজির নেই। বাচ্চাটি নাড়ি ছিঁড়েই পড়ে গিয়েছিল। কোনো রক্তক্ষরণও হয়নি বাচ্চাটির। বাচ্চাটি কিভাবে বেঁচে আছে সেটা অলৌকিক, মিরাকেল। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক্সপ্লেইন করার সুযোগ নেই।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, সোমবার দুপুরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। এক পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্টে কারো গাফলতির বিষয় উঠে আসেনি। রোগী তার স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে নিজে থেকেই মল ত্যাগের জন্য টয়লেটে যায়, আর সেখানেই বাচ্চা প্রসব করেন তিনি। বাচ্চার নাড়ি ছিঁড়ে গিয়েছিল, যে কারণে পাইপের মধ্যে কোনো বাধা ছাড়াই বাচ্চাটি ঢুকে গিয়েছিল। পাশাপাশি বাচ্চার সাইজের থেকে পাইপের সাইজ বড় হওয়ায় বাচ্চাটি সহজে ঢুকে গেছে পাইপের মধ্যে।

পরিচালক বলেন, প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে শিল্পী বেগমকে রিলিজ দেয়া হয়েছে। তিনি এখন শিশু বিভাগে তার শিশুর কাছে রয়েছেন। শিগগরিই রিলিজ দেয়া হবে তার শিশুকেও।

৭ মে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের টয়লেটে বাচ্চা প্রসব করে পিরোজপুরের নেছারাবাদ এলাকার জেলে নেয়ামত উল্লাহর স্ত্রী শিল্পী বেগম। বাচ্চাটি টয়লেটের পাইপে আটকে গেলে দীর্ঘ সময় পর শিশু বিভাগে থাকা টয়লেটের পাইপ ভেঙে উদ্ধার করা হয় বাচ্চাটিকে। এই ঘটনায় পরের দিনই তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/এআর)