সিলেটে নদ-নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল, জনজীবন বিপন্ন

মো. মুন্না মিয়া, সিলেট:
| আপডেট : ১৬ মে ২০২২, ২৩:০৪ | প্রকাশিত : ১৬ মে ২০২২, ১৮:৩৬

সিলেটের নদীগুলোতে ব্যাপক হারে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী অনেক নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে পানিতে। এছাড়াও সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি হয়ে জনজীবন বিপন্ন হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানকার মানুষ।

নদীগুলোর পানি সীমার সর্বশেষ তথ্য সোমবার (১৬ মে) সকালে জানিয়েছে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তারা জানায়, সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। কয়েকটি পয়েন্টে রবিবারের চেয়ে সোমবার পানি বেড়েছে।

পাউবো জানায়, সোমবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১.২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। রবিবার সন্ধ্যা ৬টার চেয়ে সোমবার সকালে এ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ০.৩ সেন্টিমিটার।

সুরমার পানি সিলেট পয়েন্টে রবিবারের চেয়ে সোমবার বেড়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় সিলেট পয়েন্টে পানি ছিল ১০.৪৯ সেন্টিমিটার। সোমবার সকালে পানি সীমা দাঁড়িয়েছে ১০.৬৬ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে সোমবার সকালে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বেড়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় এ পয়েন্টে পানি সীমা ছিল ৬.৮৩ সেন্টিমিটার; সোমবার সকাল ৯টায় পানি সীমা হয় ৬.৯৬ সেন্টিমিটার। পানি বেড়েছে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও। এখানে সোমবাব সকাল ৬টায় পানি সীমা ছিল ৮.৭০ সেন্টিমিটার; সকাল ৯টায় পানি সীমা দাঁড়ায় ৮.৭৪ সেন্টিমিটার।

এদিকে, গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি বিপদসীমার ০.৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কানাইঘাটের লোভা নদীর পানি রবিবারের চেয়ে বেড়েছে ০.৩৪ সেন্টিমিটার। রবিবার ছিল ১৪.৩৬ সেন্টিমিটার; সোমবার সকালে ১৪.৬৫ সেন্টিমিটার।

বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধির কারণে সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের প্রধান সড়কগুলো এখন পানির নিচে। শত শত ফসলি জমি ডুবে আছে।

এছাড়াও সিলেট নগরের নদীর পাশ্ববর্তী এলাকায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে জনজীবন বিপন্ন হয়েছে। নগরের উত্তর সুরমা ও দক্ষিণ সুরমা এলাকার নদী পাশ্ববর্তী উপশহর, মেন্দিবাগ, কদমতলী, ভার্থকলা, আলমপুর, গোটাটিকর, সোবহানিঘাট, কালিঘাট, ছড়ারপাড়, শেখঘাট, তালতলা, মাছিমপুর সহ বিভিন্ন এলাকার বসতঘর, দোকানপাট ও রাস্তাঘাট নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতার। এসব এলাকায় বসবাসকারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

এদিকে, গত রবিবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট সদর উপজেলার ১নং জালালাবাদ ইউনিয়নের রায়েরগাঁও থেকে কালারুকা আসার পথে নৌকাডুবিতে ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে প্রশাসন ও ডুবুরি দল কাজ করলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা যায়নি। নিখোঁজরা হলেন, পুটামারা গ্রামের মৃত রিফাত আলীর পুত্র আছকন্দর আলী ও রায়ের গাঁও গ্রামের ইকন্দর আলীর পুত্র রজাখ আলী।

নৌকাডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান।

তিনি জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় গতরাতেই নৌকায় থাকা ছয় জন উদ্ধার হলেও নিখোঁজ রয়েছেন দুইজন।

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :