শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য: শেখ পরশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ মে ২০২২, ২১:০৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা একজন আত্মপ্রত্যয়ী, মানবতাবাদী ও দূরদর্শী নেতা। নেতৃত্ব দিয়েই আজকে তিনি নিজেকে সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার কোনো বিকল্প নাই।

সোমবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধি, বাক প্রতিবন্ধি, শ্রবণ প্রতিবন্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধিদের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গি, হুইল চেয়ার ও সাদা ছড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মো. হুমায়ুন কবির।

শেখ পরশ বলেন, ‘২০০৭ সালে ১/১১ সময়ে এক সেনা কর্মকর্তা আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, “কেন শেখ হাসিনা অপরিহার্য আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে?” আজকে ওই প্রশ্নের উত্তর শেখের বেটি দিয়ে দিয়েছেন কেন তিনি অপরিহার্য বাংলাদেশের জন্য। নেত্রী তাঁর কর্মের মাধ্যমে ওই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, একমাত্র শেখ হাসিনাই অপরিহার্য বাংলাদেশের জন্য। শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই। বিএনপি-জামায়াত সরকার এদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল ৫ বার, আর শেখ হাসিনার সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন করেছে, শক্তিশালী করেছে। আজকে একটা মেসেজ ক্লিয়ার। দুর্নীতিবাজ যেই হোক, কারো রক্ষা নাই। আজকে দলীয় নেতা-কর্মী বলেন, আর প্রশাসনিক আমলা বলেন দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতেই হবে।

পরশ বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকার এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল, আর শেখ হাসিনা সরকার জঙ্গিবাদ এদেশ থেকে নির্মূল করে দিয়েছে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দিয়েছে, তাই এমপি বলেন আর প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না, সাজা হচ্ছে। ১৯৭৫ পরবর্তী অনেক সরকার দেখেছি, কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের মত ও সততা-ন্যায়পরায়ণতা আর কোন সরকার দেখাতে পারে নাই এই ৫০ বছরের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা এই ১৭ই এপ্রিল ১৯৮১ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন বলে এদেশের মানুষ, আমরা প্রকৃত দেশপ্রেমী এবং আদর্শিক নেতৃত্ব ফিরে পেয়েছি। দীর্ঘ ৬ বছর শরণার্থী ও নির্বাসনের জীবন কাটিয়ে, সব ভয়কে উপেক্ষা করে, এদেশের মানুষকে ভালোবেসে তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মাথায় কাফন বেঁধে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন। ভেবে দেখুন, সামরিক শাসনামলে তাঁর স্বদেশে ফেরা ছিল কতটা সাহসী সিদ্ধান্ত। ২৩ বছর তাঁর পিতা, আমাদের জাতির পিতা এদেশের দুঃখী মানুষকে ভালবেসে যৌবনের ১৫টি বছর সংগ্রাম করেছেন, জেল, জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। সেই ভালবাসার মূল্য দিতে এদেশের মানুষও বঙ্গবন্ধুকে পাল্টা ভালবেসে তাঁর ডাকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ১৯৭১ সালে, ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল, আমাদের মায়েরা ইজ্জত দিয়েছিল। সেই ভালবাসার ঋণ বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুকন্যা ধারাবাহিকভাবে দুই প্রজন্ম ধরে শোধ করে যাচ্ছেন। পরিবারের ১৫ জন সদস্য হারাবার শোক তাঁকে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে যেতে শক্তি দিয়েছে, করে তুলেছে আরও দায়িত্বশীল। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে জীবন দিয়ে গেছেন, আর তাঁর কন্যা মাথায় কাফন বেঁধে এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিচ্ছেন।

‘মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আয়োজিত লাখো জনতার উপস্থিতিতে সেদিনের সমাবেশে শেখ হাসিনা বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, “সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।” খেয়াল করে দেখুন, জাতির পিতা হত্যার বিচার কিন্তু কোন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হয় নাই। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথ থেকে আমাদের নেত্রী কখনো বিচ্যুত হন নাই। বরঞ্চ বঙ্গবন্ধুর সামাজিক ন্যায় বিচার এবং ন্যায় পরায়ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই শেখ হাসিনা দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে জাতির পিতা হত্যার বিচার সম্পন্ন করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। আজকে শেখ হাসিনার ত্যাগ ও তিতিক্ষার ফলে বাংলাদেশ শুধুমাত্র একটা উন্নয়নশীল দেশই নয়, একটা মর্যাদাশীল দেশও বটে। শেখ হাসিনা একজন আত্মপ্রত্যয়ী, মানবতাবাদী ও দূরদর্শী নেতৃত্ব হিসাবে আজকে নিজেকে সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সহনশীলতা ও দৃঢ়তা, ধৈর্য, যেন তাঁর চরিত্রগত ধর্ম। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতীক হিসেবে সারা পৃথিবীতে নন্দিত। তিনি গণমানুষের নেতা থেকে আজ বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ‘১৯৮১ সালের ১৭ মে এই ঢাকা শহরে ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে জনতার ঢল নেমেছিল বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য। সে দিন স্লোগান ছিল “হাসিনা তোমায় কথা দিলাম মুজিব হত্যার বদলা নেবো।” নদী পার হয়ে, পাহাড় ডিঙ্গিয়ে একাকার হয়েছিল গোটা ঢাকার শহর। তিনি সেদিন বলেছিলেন-সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি। আমি এই বাংলার মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাবো। আজও তিনি তাঁর ওয়াদা ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি বিএনপি-নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন-জিয়াউর রহমান একজন খুনি, এই বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এই সন্ত্রাসী সংগঠন আবারও নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরে করেছে। তারা শেখ হাসিনার সরকার পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরে যাবে না। আজকের এই সভা থেকে বলতে চাই-যদি আবারও আগুন সন্ত্রাসী করেন, পিছন দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেন, দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন তাহলে আপনাদেরকে ঘর থেকেই বের হতে দেওয়া হবে না।’

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে মো. হুমায়ুন কবীর যুবলীগের নেতা-কর্মীদের প্রসংশা করে বলেন, ‘এই করোনার মহামারিতে যখন অনেকে ঘরে বসে ছিলেন, করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন/সৎকার করার লোক ছিল না, তখন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে তাদের দাফন/কাফন করেছে। ফ্রি-অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়েছে, তারা সত্যিকারের মানবতার পরিচয় দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এই বাংলার মাটিতে যেন সেই হত্যার বিচার না হয় সে জন্য তিনি ইনডেমনিটি আইন করেছিলেন। শুধু তাই নয় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা যেন দেশে আসতে না পারে সেজন্য নানা ধরণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছিলেন। যার ফলে এদেশের মানুষ আজ অধিকার ফিরে পেয়েছে। গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছে।’

সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘খেটে খাওয়া মানুষের নেত্রী, গণতন্ত্রের মানসকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আমরা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছি, বাঙালি জাতি বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।’

তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বলেন, ‘করোনার এই মহামারি সময়ে ফ্রি-অক্সিজেনসেবা, টেলিমেডিসিন সেবা, অসহায় কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেওয়া, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির দাফন/সৎকারসহ নানা ধরণের মানবিক কাজ করে যুবলীগকে মানবিক যুবলীগে পরিণত করেছেন আপনারাই। মানুষের পাশে থেকে প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্বার্থের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, মানুষের উপর অত্যাচার-জুলুমে বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের নেতা-কর্মীরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আপনারা প্রমাণ করেছেন আপনারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার আদর্শের সৈনিক।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহা. বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, মো. সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দীসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/এমএইচ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের বিচার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

এলিফ্যান্ট রোডে বাসা থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অসুস্থতার যন্ত্রণা সইতে না পেরে ছুরিকাঘাতে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

বুধবার থেকে এক ঘণ্টা বাড়ছে মেট্রোরেল চলাচলের সময়

ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে জাইকা ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রাজউকের সভা

২৭ মার্চ থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :