৫০ বছর ধরে ৩ গ্রামের মানুষের দুঃখ মলাইশ-শাহজাদাপুর রাস্তা

প্রকাশ | ১৭ মে ২০২২, ১২:০৯ | আপডেট: ১৭ মে ২০২২, ১২:১৮

শেখ সিরাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার মলাইশ-শাহজাদাপুর রাস্তা ৩ কিলোমিটার পাকা হয়নি দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছরেও।

বৃষ্টি-বাদলে কর্দমাক্ত হয়ে পুরো রাস্তা জনগণ ও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে রাস্তাটি রূপ নেয় চাষের জমিতে! সড়ক না চাষের জমি বুঝা হয়ে উঠে দায়!

তখন ওই এলাকার শাহজাদাপুর, নিয়ামতপুর ও ধাউড়িয়া এই তিন গ্রামের ২০ হাজার মানুষের ভোগান্তির সীমা থাকে না। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রাস্তাটির পাকাকরণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ ওই এলাকাবাসী।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রাস্তাটি যেন ধান চাষের জমি!

বৃষ্টি হলেই সড়কের এই কাঁচা অংশে জমে থাকে পানি আর কাদা। আটকে যায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ যানবাহন। যাত্রীদের ঠেলতে হয় গাড়ি। অথচ এই রাস্তা দিয়েই প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন ইউনিয়নের শিশু, বৃদ্ধা, প্রসুতি নারী, অসুস্থ রোগী ও মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজগামী হাজার হাজার মানুষ।

শাহাজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক শেখ হামিদুল ইসলাম বলেন, গত এক যুগ ধরে অল্প কিছু মাটি ভরাট, মাপজোক ছাড়া রাস্তার কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখা যায়নি। বছরের পর বছর রাস্তা নির্মাণের দাবিতে প্রতিবাদ করলেও কোনো ফল হয়নি।

গাড়িতে যাত্রী নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ‍খুবই দুর্ভোগের। কাদা মাড়িয়ে চলতে হয় বলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এবং গাড়ির যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায় জানালেন অটো রিক্সা, সিএনজি   চালকেরা।

শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসমা আক্তার বলেন, এই রাস্তার জন্য ৩ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ কষ্ট করছে। রাস্তাটি পাকা করার জন্য আমি নির্বাচিত হওয়ার পর সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। স্বাধীনতার পর থেকেই নেতাদের কাছ থেকে আমরা শুধু আশ্বাস পেয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ৫০ বছরেও বাস্তবায়ন হলোনা রাস্তাটির।

রাস্তাটির চলাচল উপযোগিতা হারানোর ফলে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে সরাইল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক মো. আমিন খান লিখেছেন জনপ্রতিনিধিদের এই গ্রামে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনা প্রয়োজন, জুতা হাতে নিয়ে হেঁটে আসলে গ্রামবাসীর কষ্ট বুঝতে ওনাদের সহজ হবে। এ দিকে ব্যাংকার শেখ মোতাহার হোসেন তার আইডিতে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন রাস্তার দুর্ভোগের কারনে ওই এলাকার বকেয়া ঋণ আদায় কার্যক্রম পরিচালনায় গতি পাচ্ছি না।

সরাইল উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী নিলুফা ইয়াসমিন  বলেন, এ সড়কের কাজের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

২০০৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ মাঠের জনসভায় এই রাস্তাটি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বিগত সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদসদস্য গণ  প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত এই রাস্তাটির বাস্তবায়নের দাবিতে সংসদে দাবি উত্থাপন করেও কোন ফল হয়নি। অন্য দিকে রাস্তাটির সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়, জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও রাস্তার উন্নয়নের কোন উদ্যোগ দেখতে না পেয়ে এলাকাবাসী দারুণ হতাশ।

(ঢাকাটাইমস/১৭মে/এআর/এসএ)