সুনামগঞ্জ সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ১৭ মে ২০২২, ১৬:৫৬ | প্রকাশিত : ১৭ মে ২০২২, ১৬:৪৮

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। জেলার সুরমা নদীর পানি বিপদসীমায় অবস্থান করছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। হাওরাঞ্চলে ও নিন্মাঞ্চল এবং সীমান্ত এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। উঁচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে বাদাম, মৌসুমী সবজি। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে দিনমজুর ও গরিব-দুঃখী মেহনতী মানুষের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, জেলার ছাতক, দোয়ারা বাজার, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ সদর, শাল্লা, দিরাই, জগন্নাথপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্য নগরসহ ১২টি উপজেলার নিন্মাঅঞ্চল পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। হাওর প্রধান সুনামগঞ্জের রক্তি, গজারিয়া, সুরমা নদীর পানি বেড়ে বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। বিশ্বম্ভরপুরে সলুকাবাদ ইউনিয়নে অবস্থা খারাপ। সেখানে কয়েকটি রাবার ড্রাম উপচে গ্রাম ও ফসল ডুবেছে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহীম, সদরগড়, সৈয়দপুর এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার তিন ইউনিয়েনের বরকতনগর, শরীফপুর গোজাইড়া, মহব্বাতপুর মামদপুর, মারফতি গ্রামসহ অনন্ত ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এছাড়াও জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সড়ক ও ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানায়,ঢলের পানিতে তাহিরপুর ও সদর উপজেলার উচ্চ এলাকার ২০ হেক্টর বোরো জমি তলিয়ে গেছে। ঢলের পানি নেমে যাওয়ার আশায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা যাচ্ছে না। যদিও হাওরপাড়ের ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন ঢলের পানিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হতে পারে।

সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহীমপুর গ্রামের বাসিন্দা মিয়া হোসেন জানান,ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পানির কারণে চলাচল করা যাচ্ছে না। অনেক ঘরে পানি উঠেছে।

সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পুরাতন পৈন্দায় গ্রামে কয়েকটি ঘরের কাছাকাছি পানি ছুঁই ছুঁই করছে। যে কোন মুহূর্তে ঢলের পানিতে ঘরগুলো তলিয়ে যেতে পারে। হাওরে কৃষকের ইরি ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকেই আধাকাচা পাকা ধান কাটতে পেরেছেন,অনেকেই পারেননি।

দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মামুন মিয়া জানান, ঢলের পানি দোয়ারাবাজার উপজেলার কাংলা, নাইন্দা, গোজাউরা, সিংরাই হাওরের স্কীমের ধান তলিয়ে গেছে। পাহাড়ের সীমান্তবর্তী অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।

তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ মোরাদ জানান, আমার এলাকা হাওর বেষ্টিত। পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়া নিন্মাঅঞ্চলের বসত বাড়িতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পরেছে দিন মজুর ও অসহায় পরিবারের মানুষজন কষ্টে পড়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রশারন বিভাগের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ঢলের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনো পুরোপুরি নিরূপন হয়নি। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলা ১০ হেক্টর ও সদর উপজেলার ১০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রাবার ড্রামগুলোকে ২ ফুট নামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুবা আরো গ্রাম ডুবে যাবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১৭মে/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :