পরীমনিকে ‘ধর্ষণচেষ্টা’: ব্যবসায়ী নাসিরসহ ৩ জনের বিচার শুরু

প্রকাশ | ১৮ মে ২০২২, ১২:৩৪ | আপডেট: ১৮ মে ২০২২, ১৩:৪৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকা বোট ক্লাবে নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন (চার্জগঠন) করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে আলোচিত এ মামলার বিচার কাজ শুরু হলো।

বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন এ আদেশ দেন ।

অভিযোগ গঠনের সময় তিন আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

এর আগে মঙ্গলবার অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন আদালতে উপস্থিত হন মামলার বাদী পরীমনি।

নাসিরসহ তিন আসামিও আদালতে হাজিরা দেন ওইদিন। শুনানিকালে আসামিদের আইনজীবী তাদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক এ বিষয় আদেশের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।

গত বছরের ৯ জুন মধ্যরাতে সাভারে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

ওই ঘটনার চার দিন পর ১৩ জুন রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এবং রাত ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনা প্রকাশ করেন নায়িকা পরীমনি।

পর দিন ১৪ জুন সকালে ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি।

মামলার পর ওই দিনই বিকালে রাজধানীর উত্তরা থেকে নাসির ও অমিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। এর পর তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার।

ওই মামলায় গত ১৫ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি নাসির ও অমির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে পরীমনির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদের।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি (৩০), অমি (৪০) ও বনিসহ (২০) দু’টি গাড়িতে করে তারা উত্তরার উদ্দেশে রওনা হন। পথে অমি বলেন, বেড়িবাঁধের ঢাকা বোট ক্লাবে তার দুই মিনিটের কাজ আছে।’

‘অমির কথামতো তারা সবাই রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করায়। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। অমি ক্লাবের ভেতরে গিয়ে বলে এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পার।’

এজাহারে পরীমনি আরও বলেন, ‘তখন আমার ছোট বোন বনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বোট ক্লাবে প্রবেশ করে ও বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করে। টয়লেট থেকে বের হতেই এক নম্বর বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদের ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ এক নম্বর আসামি মদপানের জন্য জোর করেন। আমি মদপান করতে না চাইলে এক নম্বর আসামি জোর করে আমার মুখে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আমি সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই। এক নম্বর আসামি (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন ও আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তিনি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে থাকা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন কস্টিউম ডিজাইনার জিমি নাসির উদ্দিন মাহমুদকে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে জখম করেন।’

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/কেআর/এফএ)