সম্রাটের জামিন দেওয়া বিচারককে সতর্ক করলেন হাইকোর্ট

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাকে সাতদিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজহারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশের সময় হাইকোর্ট সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করা বিচারককে সতর্ক করেছেন।

নিম্ন আদালতের বিচারক সম্রাটের জামিন দিয়েছিলেন মেডিকেল গ্রাউন্ডে। কিন্তু তিনি মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পাননি। সেটা না দেখেই জামিন দেওয়ায় হাইকোর্ট বলেছেন, ‘বিচারক যেন ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দিয়েছেন।’

ভবিষ্যতে তিনি যেন এ ধরনের কাজ না করেন সেজন্য সতর্কও করেন উচ্চ আদালত।

গত সোমবার সম্রাটকে বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রিভিশন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করে দুদক।

বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজহারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরদিন মঙ্গলবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন আদালত।

বুধবার জামিন বাতিল করে সম্রাটকে সাতদিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এর আগে গত ১১ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান সম্রাটের অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচারের দুই মামলায় জামিন দেন। তিনটি শর্তে তাকে জামিন দেওয়া হয়। ওই দিন কারাগারে জামিনের কাগজ পৌঁছালে বিকালেই তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। আগে থেকেই সম্রাট কেরানীগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আওতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি ছিলেন। জামিনের পরও তিনি সেখানে ভর্তি আছেন।

ক্যাসিনোকাণ্ডে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাকে নিয়ে কাকরাইলে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এসময় কার্যালয়ের ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। তখন থেকে প্রায় আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক এই নেতা।

সম্রাটের জামিনের তিন শর্তের মধ্যে রয়েছে- আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগ করতে পারবেন না, পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার প্রতিবেদন আগামী ধার্য তারিখে জমা দিতে হবে।

এর আগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

এদিকে গত ১১ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেসিন ইফতেখার। এ ছাড়া গত ১০ এপ্রিল অস্ত্র মামলায় ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফায়সাল আতিক বিন কাদের ও অর্থপাচার মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন জামিন মঞ্জুর করেছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/এফএ)