পি কে হালদারকে ফেরাতে দুদকের কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ১৫:৩৫ | প্রকাশিত : ১৮ মে ২০২২, ১৪:১৫

ভারতে গ্রেপ্তার প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) দেশে ফেরাতে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার কমিশন সভায় এ কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে রাখা হয়েছে পি কে হালদারের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এবং আরেক তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানকে।

কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এখনো কিছু জানেন না বলে ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছেন। কমিটির অন্য সদস্য মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে অফিসিয়ালি বাংলাদেশ এখনো ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অবহিত না হলেও মঙ্গলবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দোরাইস্বামী বলেছেন, ‘বাংলাদেশি পলাতক ব্যবসায়ী প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গে আটক করা হয়েছে।’

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর হাইকমিশনার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এটি একটি প্রক্রিয়া, এর বাইরে বিশেষ কিছু নয়।’

পররাষ্ট্র সচিব পরে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৈঠকে আমি বিষয়টি উত্থাপন করেছি। তিনি (ভারতীয় হাইকমিশনার) আমাকে এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ঢাকা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে হালদারকে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করবে, এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতকারী পি কে হালদার সম্প্রতি ভারতের কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার পর প্রথম দফায় তাকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই রিমান্ড শেষ হলে মঙ্গলবার তাকে আদালতে তুলে আরও ১৪ দিনের রিমান্ড চায় ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত শনিবার পি কে হালদারসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে ইডি। পরে তাদের উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে পাঁচজনকে ১৭ মে পর্যন্ত ইডি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। আর আটক এক নারীকে ১৭ মে পর্যন্ত কারা হেফাজতের নির্দেশ দেয়া হয়।

শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর এক বিবৃতিতে ইডি বলেছে, হাজার কোটি টাকা পাচারকারী পি কে হালদার নাম পাল্টে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে বসবাস করতেন। প্রদেশের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

ইডি বলেছে, ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিপুল সম্পদ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচারের মাধ্যমে ভারতে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে খোঁজ পেয়েছে ইডি।

দেশটির কেন্দ্রীয় এই তদন্ত সংস্থা বলছে, তারা ইতোমধ্যে পি কে হালদারের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছেন। এসব নথিতে প্রাথমিকভাবে ভারতে তার ২০ থেকে ২৫টির মতো বাড়ির মালিকানার তথ্য মিলেছে। এছাড়া অভিযানের সময় পি কে হালদারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থও জব্দ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে ইডি বলেছে, বাংলাদেশি নাগরিক প্রশান্ত কুমার হালদার নিজেকে শিবশঙ্কর হালদার নামে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

বাংলাদেশি এই অর্থপাচারকারী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে ভারতীয় রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান এবং আধার কার্ডও সংগ্রহ করেছিলেন। প্রশান্ত কুমার হালদারের অন্য সহযোগীরাও ভারতীয় এসব কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে সংগ্রহ করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :