কে বেশি ধন্যবাদ পাবার দাবিদার?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ মে ২০২২, ২১:২৮

অপরাধীর দায়ের কোপে কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কনস্টবল জনির চিকিৎসার ক্ষেত্রে কে বেশি ধন্যবাদ পাবার দাবিদার? সুদক্ষ হাতে অপারেশনকারী ডাক্তার, নাকি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা?

বিতর্কে মেতে থাকা ভদ্রমহোদয় ও মহোদয়াগণের প্রতি আমার সবিনয় জিজ্ঞাসা-এই চিকিৎসা দানকারী ও সহায়তাকারী ব্যক্তিদের ধন্যবাদ ইস্যু নিয়ে চর্চায় দিনরাত আপনারা যতটা সময়ের শ্রাদ্ধ করছেন, দেশের জন্য কাজ করতে যেয়ে হাত 'হারানো' একজন কনস্টবলকে ধন্যবাদ জানাতে তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভগ্নাংশ পরিমাণ সময়ও ব্যয় করেছেন কি?

ফি নিয়ে হোক কিংবা বিনে পয়সায়, পেশাগত সেবার অংশ হিসেবে ডাক্তার সাহেব অপারেশন করেছেন, নিজ বাহিনীর আহত সদস্যের প্রতি পেশাগত দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অপরাধীর দায়ের কোপে নিজের হাত বিচ্ছিন্ন করার মতো গৌরবজনক সাহসিকতা দেখিয়েছেন কে?

পক্ষে-বিপক্ষে লক্ষ-কোটি ধন্যবাদের পসরা সাজিয়ে বসার আগে নিজের বিবেককে জিজ্ঞেস করুন- একটি, শুধু একটি ধন্যবাদও কি প্রাপ্য ছিল না দেশের জন্য মহান আত্মত্যাগকারী হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা কনস্টবল জনির?

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কনস্টবল জনি শঙ্কামুক্ত। কিন্তু তাই বলে যদি আপনি মনে করে থাকেন যে, আগামীকাল থেকে তিনি কংফু-কারাতে খেলার মতো শক্তসমর্থ হয়ে যাবেন, তাহলে বলব- আপনি ভুলের স্বর্গে আছেন। বেশ কজন ডাক্তার বন্ধুর সঙ্গে কথা হয়েছে, জেনেছি বিচ্ছিন্ন হাতটি (ইনশাআল্লাহ) হয়তো জোড়া নেবে সত্য, কিন্তু পাশাপাশি এটাও মেনে নিতে হবে যে, শোভাবর্ধক, আধা-অসাড় একটি হাত বয়ে নিয়েই জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিবেন কনস্টবল জনি।

পেশাগত জীবনে অপরাধী পাকড়াও করা থেকে শুরু করে ব্যক্তিজীবনে সন্তানকে কোলে নেওয়ার মুহূর্ত পর্যন্ত কোটি কোটি বেদনাযুক্ত 'উফ!' শব্দই তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থেকে যাবে। মহান এই ত্যাগের উপাখ্যানকে স্বীকৃতি দেওয়ার চাইতে ধন্যবাদ ইস্যুতে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টিই যদি আপনার কাছে মুখরোচক ট্রেন্ডি হয়, তাহলে বলব- ধিক, শত ধিক আপনাকে। ছিহ!

সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়া একজন পুলিশ সদস্যের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করায় ডা. ফারুকী স্যার ও তাঁর টিম, আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ স্যার ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অন্য যারা ছোটবড় অবদান রেখেছেন তাঁদের সবাইকে ২ লক্ষাধিক পুলিশ সদস্যের পক্ষ থেকে আবারও আন্তরিক কুর্ণিশ, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।

লেখক: আনোয়ার হোসেন (শামীম), বিসিএস (পুলিশ), এএসপি, রাঙ্গুনিয়া সার্কেল, চট্টগ্রাম

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/এসকেএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :