সিলেটে মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে ত্রাণের জন্য হাতাহাতি
নিজের সংসদীয় এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন ও বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে এসেছেন প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি শনিবার (২১ মে) সকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের থানা বাজার পয়েন্টে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রী ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পরপরই ত্রাণ প্রত্যাশী আর প্রশাসনের লোকজনের মধ্যে হট্টগোল আরম্ভ হয়। এতে পুলিশ প্রশাসন বাধা দিলে তাদের সঙ্গে জনতার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটের প্রায় সব উপজেলার মতো কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ৫০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হন। আর এসব পরিবারের লোকজনের মধ্যে কোনো ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়নি। শনিবার সকালে এসব পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করতে আসেন স্থানীয় সাংসদ প্রবাসী মন্ত্রী ইমরান আহমদ। সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার প্রদান করার জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলে বরাদ্দের সংখ্যায় চেয়ে বেশি মানুষ উপস্থিত হন। তালিকাভুক্ত না হয় উপস্থিত অন্যান্যরা খাদ্য সামগ্রীর জন্য প্রশাসনের নিকট আকুতি জানালে পরবর্তীতে সবাইকে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হবে বলে জানান প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তি। এসব কথা না মেনে উপস্থিত জনতার কিছুসংখ্যক লোক অন্যান্যদের জন্য বরাদ্দকৃত শুকনো খাবারের প্যাকেট নিয়ে যেতে চান। এসময় পুলিশ বাঁধা দেয়। পরে পুলিশ ও জনতার মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে পরবর্তীতে পুলিশ লোকজন সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, আমরা গরিব মানুষ। ঘরে ভাত নাই। মন্ত্রী আসার খবরে ত্রাণ নিতে এসেছি ; কোনো ত্রাণ পাইনি। আমরা খুব কষ্টে আছি। আমরা ৫০ হাজার পরিবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছি। তাদের জন্য মাত্র ১২০ প্যাকেট খাবার নিয়ে এসেছেন মন্ত্রী। যা উপস্থিত জনসাধারণের ৫ ভাগের ১ ভাগ।
স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, আমরা ২০০ জনের তালিকা করে মন্ত্রী মহোদয়কে দিয়ে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছি। তবে সেখানে তালিকার বাহিরের লোকজন এসে হট্টগোল শুরু করে। আমরা পর্যায়ক্রমে তাদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করবো।
ইউএনও ২০০ প্যাকেটের কথা বললেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, আমাদের প্রত্যেক ইউনিয়নের জন্য ২০ প্যাকেট করে খাবার দেয়ার জন্য তালিকা করা হয়েছে। তালিকার বাহিরের লোকজন হট্টগোল করলে আমরা তা নিয়ন্ত্রণে আনি।
ওসির হিসাব অনুযায়ী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ২০০ প্যাকেট নয় ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ৮ ধরনের পণ্য সামগ্রী দিয়ে ২২ শত টাকা মূল্যের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।(ঢাকাটাইমস/২১মে/এআর)