এখন বাজারে শুধু গোপালভোগ আর গোবিন্দভোগ

প্রকাশ | ২২ মে ২০২২, ১২:৩৪ | আপডেট: ২২ মে ২০২২, ১৬:৫১

মোয়াজ্জেম হোসেন
ঢাকাটাইমস

এসেছে আমের মৌসুম, মধুমাস। বৈশাখের পর থেকেই এই রসালো সুস্বাদু ফলটির জন্য অপেক্ষা শুরু। গাছে গাছে ভরে থাকে আম। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির আম পাওয়া যায়। তবে কোন জাতের আম কখন পাকবে বা পরিপক্ব হবে তা বেশির ভাগ মানুষই জানে না। তবে একটু সচেতন হলেই আম কিনে আর ঠকতে হবে না।
এই মে মাসে দুই জাতের পরিপক্ব আম পাবেন- গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ।

গোপালভোগ জাতের আম

গোপালভোগ জাতের আমটি বাংলাদেশে সবার আগে পাকে। মধ্য মে থেকেই এটি পাওয়া যায়। তবে এ জাতের আমটি বেশিদিন বাজারে থাকে না। জুন মাসের মাঝামাঝিতেই এটি শেষ হয়ে যায়। সবচেয়ে ভালো মানের গোপালভোগ আম মে মাসের ২৫ তারিখ থেকে জুন মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পাওয়া যায়। 
দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও দিনাজপুর জেলায় গোপালভোগ আম বেশি উৎপাদিত হয়ে থাকে। এছাড়া সাতক্ষীরায় এ আম উৎপাদন হয়।

গোপালভোগ জাতের আমটি মাঝারি আকৃতির এবং সামান্য লম্বা। অবতল বা সাইনাস অনেকটাই বাঁকানো। এবং শীর্ষদেশ অনেক সরু ও গোলাকার। পোক্ত হলে পৃষ্ঠদেশ ও সম্মুখে কাঁধের অংশের খোসায় সাদা সাদা ক্ষুদ্র ফোঁটা পরিলক্ষিত হয়। গোপালভোগ অনেকটা কালচে সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। পাকলে ত্বক হালকা থেকে কিঞ্চিৎ হলুদাভ বর্ণ ধারণ করে। গোপালভোগ আম সাধারণত গড়ে লম্বায় ৮.৬ সেন্টিমিটার এবং ৬.৪ সেন্টিমিটার প্রশস্ত হয়ে থাকে। এই আমের খোসা সামান্য মোটা। শাঁস আঁশবিহীন ও রসাল। 

গোপালভোগ আমের গাছে ফল আসে প্রচুর পরিমাণে। এ আমের বোঁটা শক্ত। তবে আমটি পাকা অবস্থায় ৩-৪ দিনের বেশি রাখা যায় না। 

মুকুল আসা থেকে শুরু করে পরিপক্ব হতে মোট চার মাস সময় নিয়ে থাকে এই আম।

গোবিন্দভোগ জাতের আম 

গোবিন্দভোগও বাংলাদেশে আগে পরিপক্ব হওয়া আমের একটি। এই জাতের আমটি সাতক্ষীরায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। ভালো মানের গোবিন্দভোগ মে মাসের মাঝামাঝি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত পাওয়া যায়।

এই জাতের আমটি পাকার পর হলুদ বর্ণ ধারণ করে। এটি দেখতে অনেকটা হিমসাগর আমের মতো, তবে আকারে হিমসাগরের চেয়ে বেশ বড় ও লম্বাটে। চওড়ার দিকটায় চ্যাপ্টা ধরনের।

দেশে একটি আম ক্যালেন্ডার রয়েছে। এতে বিভিন্ন জেলায় আম পাকার তারিখ নির্ধারণ করা আছে। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীতে রানিপছন্দ ১ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে পাকে; চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরায় ক্ষীরসাপাত পাকে ৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত; চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাক ফজলি পাকে ৮ থেকে ২৫ জুন; চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোরের বোগলাগুটি ১২ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোরের বারি আম-২ (লক্ষণভোগ) ১৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোম্বাই ১২ জুন থেকে ৫ জুলাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও সাতক্ষীরায় ল্যাংড়া ১৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোরের তোতাপুরী ১৫ জুন থেকে ১০ জুলাই; রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা ২০ জুন থেকে ৫ আগস্ট; আম্রপালি পুরো দেশেই ২৮ জুন থেকে ২৫ জুলাই; ঠাকুরগাঁওয়ের সূর্যপুরী ১ থেকে ২০ জুলাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোরের সুরমা ফজলি ৩০ জুন থেকে ৩০ জুলাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরায় ফজলি ৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট; বারি-৪ রাজশাহী অঞ্চলে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০ জুলাই পর্যন্ত; রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে মল্লিকা ৭ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট; চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোরের মোহনভোগ ৮ থেকে ৩০ জুলাই; চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁর আশ্বিনা ২০ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রাকৃতিকভাবে পেকে থাকে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে কোন আম কোন সময়ে গাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে সে বিষয়ে তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/এফএ)