ঢাকায় বসে নেতাগিরি নয়, মৎস্যজীবী লীগকে ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ | ২২ মে ২০২২, ১৭:২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে ও খাতের উন্নয়নে মৎস্যজীবী লীগকে সারাদেশে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ঢাকায় বসে বসে নেতাগিরি করলে হবে না৷ যেখানে মাছের উৎপাদন হয়, সেখানে মৎস্যজীবী লীগের কাজ।

রবিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মৎস্যজীবী লীগের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

এসময় আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনের ঘটনায় মূল আসামি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের জানান, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

গত ১১ ও ১২ মে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উত্তর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি করা হয় আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনের ঘটনায় মূল আসামি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে।

এরপরই সমালোচনার মুখে পড়ে সংগঠনটি। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মী এই বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অকেজো মৎস্যজীবী লীগ আমরা স্বীকৃতি দেব না। স্বীকৃতি দিয়েছি কাজ করার জন্য। কাজ কতটুকু করেছেন সেটার রিপোর্ট আমরা চাই। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের কমিটি নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মৎস্যজীবী লীগের কাজ সারাবাংলায়। যেখানে মাছের উৎপাদন হয়, সেখানে মৎস্যজীবী লীগের কাজ। ঢাকায় বসে বসে নেতাগিরি করলে হবে না৷ ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের কমিটির হয়েছে। কমিটির ব্যাপারে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে একটা অভিযোগ এসেছে। সেটা ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে মূল যে সমস্যা, সমস্যা হলো আমরা কথা বলি বেশি কাজ করি কম। মৎস্যজীবী লীগের নেতারা কয়টা জেলা ভিজিট করেছে? আমি আপনাদের রিপোর্ট জানতে চাই। কী কী কাজ করেছেন? এক-একটা দিবস আছে, সে দিবস এলে এখানে শুধু বক্তৃতার আসর বসে। তারপরে বক্তৃতা শেষ, সব শেষ। এরপর আর কোনো কাজ কর্ম নেই। এমন মৎস্যজীবী লীগের কোনো দরকার নেই।

আওয়ামী মৎস্য জীবী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সায়ীদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নষ্করের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুল সোবহান গোলাপ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাবু সুজিত রায় নন্দী, আওয়ামী মৎস্য জীবী লীগের কার্যকরী সভাপতি মো. সাইফুল আলম মানিক, সহ সভাপতি আবুল বাশার মুহাম্মদ আলম প্রমুখ।

২০১২ সালে আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জন পোশাকশ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যায়। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারকে দেশে-বিদেশে বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তৈরি পোশাক খাত থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছিল।

সেই ঘটনার মূল আসামি তাজরীনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন এখনো আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা। এই অগ্নিকাণ্ডের মামলা গত ১০ বছরেও সুরাহা হয়নি।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে সারাবিশ্বে যে প্রভাব পড়েছে তার থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন না। বাংলাদেশেরও এর প্রভাব বিস্তার করবে তার আলামত আমরা কিছু কিছু দেখতে পাচ্ছি।

আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে জাদুঘরে চলে গেছে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।

নির্বাচনের সময় দেশের সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকে না। তখন সরকার হস্তক্ষেপ করতেও পারে না।

সরকার অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে। এটাই নিয়ম, এর বাইরে অন্য কোনো পথ নেই। বিএনপিকে এ পদ্ধতি মেনেই নির্বাচনে আসতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/ইএস)