সুস্বাদু লিচুতে ভরে গেছে রাজধানীর বাজার, কেন খাবেন মৌসুমি ফলটি

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২২, ১০:৫৬ | আপডেট: ২৩ মে ২০২২, ১১:৪২

ওমর ফারুক, ঢাকাটাইমস

গ্রীষ্মের অন্যতম ফল হচ্ছে লিচু। রসালো এই ফলটি সবারই পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। ইতিমধ্যেই বাজার ভরে গেছে লাল লিচু ফলে। বিক্রেতারা ঝুড়ি ভরে লিচু নিয়ে ব্যস্ত হাঁকডাকে। ক্রেতারাও আগ্রহ ভরে কিনছেন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই মৌসুমি ফল।

সরজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, এক সারিতে অনেকগুলো লিচুর দোকান। সেখানে শোভা পাচ্ছে দেশি-বিদেশি লিচু। তবে দেশি লিচুই বেশি। এর মধ্যে বোম্বাই লিচুর চাহিদা বেশি। এ জাতের লিচু বিক্রিও হচ্ছে ভালো। এছাড়াও পাবনার ঈশ্বরদীর লিচু, চায়না থ্রি লিচুও বিক্রি হচ্ছে বেশ।

কথা হয় লিচু বিক্রেতা আবদুস সামাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘লিচুর যোগান ভালোই। বোম্বাই লিচু বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ লিচুর বিশেষত্ব হলো বীজ ছোট, শাঁস বেশি, যা খেতেও ভালো লাগে।’

অপর বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, ‘চায়না থ্রি লিচুর বীজ একদম ছোট, প্রায় পুরোটাই শাঁস। তাই এ লিচুর দামটা একটু বেশি। তবে বোম্বাই লিচু, ঈশ্বরদীর লিচুই চলছে বেশি।’

বোম্বাই লিচু ১০০ পিস বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা। আর যেগুলো আকারে কিছুটা ছোট তা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। চায়না থ্রি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। তবে দাম কিছুটা বেশি বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।

ক্রেতা রাজীব হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অন্যবারের তুলনায় এবার লিচুর দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে। অথচ সিজন টাইমে দাম কম থাকার কথা।’

পাশে থাকা আরেক ক্রেতা শরীফ আহমেদ বলেন, ‘দুদিন আগে লিচু কিনেছি ১৫০ টাকা করে। আজ কিনছি ১৮০ টাকা করে।  এভাবে বাড়লে তো সাধারণ মানুষের ফল খাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।’

দামের বিষয়ে বিক্রেতারা বলেন, আনুষঙ্গিক নানা খরচের কারণে দাম বেড়ে যায়।’

কারওয়ান বাজারের লিচু বিক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, ‘পাইকারিতে আমাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। এছাড়া পরিবহন খরচ, জায়গার ভাড়াসহ নানা কারণে খরচ বেড়ে যায়।’

আরেক বিক্রেতা বিজয় দাস ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এবার দেশের কিছূ অঞ্চলে লিচুর ফলন নষ্ট হয়ে গেছে। যার ফলে পাইকারিতে দাম বেড়ে গেছে। আর চাহিদা থাকলে দাম কিছুটা বেড়ে যায়। তবে আশা করছি দাম কমে যাবে।’

লিচুর পুষ্টিগুণ

সুস্বাদু ফল লিচুর রয়েছে বেশ কিছু গুণ। লিচু থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং পটাসিয়াম পাওয়া যায়। কিডনিতে জমা হওয়া টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে এগুলো। লিচু ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্বও কমায় যা কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি হ্রাস করে।’

এছাড়াও লিচুতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাংগানিজ এবং কপার। এসব উপাদান হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত লিচু খেলে হাড়ের ভঙ্গুরতা কমে এবং অস্টিওপোরোসিস ও ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে লিচুর জুড়ি নেই। লিচু অলিগোনল ভাইরাসকে বাড়তে দেয় না। তাই গ্রীষ্মের এই সময়টায় নিয়মিত লিচু খেলে সাধারণ সর্দি এবং ফ্লুতে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

ভিটামিন সি এর পাশাপাশি ভিটামিন ‘কে’ এবং ‘ই’ পাওয়া যায় লিচু থেকে। এতে কম মাত্রায় রিবোফ্লাভিন এবং নিয়াসিন রয়েছে। গরমে নিয়মিত লিচু খেলে দৈনিক ভিটামিন বি৬-এর চাহিদার ১০ শতাংশ পাওয়া যায়। এটা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে এবং প্রদাহজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে।

(ঢাকাটাইমস/২৩মে/ওএফ/এফএ