প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণের আত্মসমর্পণ

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ মে ২০২২, ১৩:২২ | প্রকাশিত : ২৩ মে ২০২২, ১২:৫৭

দুদকের করা অবৈধ সম্পদের মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসের স্ত্রী চুমকি কারণ চট্টগ্রামের আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

পলাতক চুমকি আজ সোমবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ মামলায় গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে প্রদীপ ও চুমকির বিচার শুরু হয়। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

এর আগে সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আটক হন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ। এরপর বেরিয়ে আসে তার আরও নানা অপরাধের খবর, যার মধ্যে রয়েছে জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ। এ বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করে বিপুল সম্পদের সন্ধান পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। অভিযোগ গঠনের পর বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

এদিকে মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলায় কারাগারে থাকলেও তার স্ত্রী চুমকি এত দিন পলাতক ছিলেন। ইতিমধ্যে সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ ও ইনস্পেক্টর লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে।

দুদকের মামলা

২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপের সঙ্গে তার স্ত্রী চুমকিকেও আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনেন তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি জানান, প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন।

দুদকের এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে। নানা কারণে তিনি আলোচিত হতে থাকেন।

প্রদীপ দম্পত্তির যত সম্পদ

২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল প্রদীপ ও তার স্ত্রীর সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলা হলেও চুমকি তা জমা দেন ২০১৯ সালের ১২ মে। দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোল শহরের বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে চুমকির নামে। তাঁর ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। এছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এ ব্যবসায়ের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অভিযোগপত্রে সাক্ষী রাখা হয়েছে ২৯ জনকে।

দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকির নামে চট্টগ্রামের কোতোয়ালিতে জমিসহ ছয়তলা বিলাসবহুল বাড়ি। আর এই বাড়ির বিষয়ে চুমকি দুদককে জানান, ২০১৩ সালে বাড়িটি তার বাবা তাকে দান করেছেন। কিন্তু চুমকির অন্যান্য ভাই ও বোনদের তার বাবা কোনো সম্পত্তি দান করেননি। শুধু তাই নয়, ২০০৬ সালে শ্বশুরের নামে কেনেন বাড়ির জমি। এরপর ৬ তলা বহুতল ভবন গড়ে তোলেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে বাড়িটি নির্মাণ ও জমি ক্রয় করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৩মে/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :