বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিবাচক হলেই ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার?

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২২, ০৯:৪৯ | আপডেট: ২৫ মে ২০২২, ১১:৫৪

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

টানা আট দিন দরপতনের পর সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের একগুচ্ছ নির্দেশনার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল পুঁজিবাজার। এদিন ডিএসইর মূল্য সূচক ১১৮ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ২৬১ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। এরপর মঙ্গলবার আবার সূচকের বড় পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগের ২৩ মে তারিখের স্মারকের মাধ্যমে এরই মধ্যে গঠিত ৯০০ কোটি টাকার ‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’-এর অবশিষ্ট আদায় করা অর্থের ১৫৩ কোটি টাকা বিদ্যমান ৮৫৬ কোটি টাকার তহবিলের সঙ্গে যোগ করে আবর্তনশীল ভিত্তিতে পুনর্বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের মেয়াদ ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং সর্বশেষ বিতরণ করা ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২০২৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ আবর্তনশীল ভিত্তিতে পুনর্বিনিয়োগযোগ্য এ তহবিলের মোট পরিমাণ হবে ১ হাজার ৯ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পুঁজিবাজারকে চাঙা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেওয়া সব পদক্ষেপ বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারির মাধ্যমে পরিষ্কার করলেই বাজার ভালো হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তা পালন করলে তবেই বাজার তার গতি ফিরে পাবে।

এদিকে পুঁজিবাজারের তারল্য বৃদ্ধি করে পুঁজিবাজারকে চাঙা করতে ‘ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’ থেকে আরও ৪০০ কোটি টাকা ছাড় করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে মঙ্গলবার পাঁচটি ব্রোকারেজ হাউজের অনুকূলে ২২ কোটি টাকা ছাড় করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।

এই ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে ৩৭৮ কোটি টাকা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজের অনুকূলে ছাড় করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে করে পুঁজিবাজারের তারল্য প্রবাহ অনেকখানি বৃদ্ধি পাবে। আর তারল্য বৃদ্ধি পেলে বাজার ফিরে পাবে তার স্বাভাবিক গতি।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘বাজারে অর্থপ্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা ফান্ডের আকার বাড়ানো হয়েছে এবং সেখান থেকে ৪০০ কোটি টাকা অবিলম্বে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, এটি বাজারের জন্য ইতিবাচক উদ্যোগ। এতে করে বাজারে অর্থপ্রবাহ বাড়বে এবং বাজার ভালো হবে।’

এ বিশ্লেষক পরিষ্কার করে বলেছেন, ‘শুনেছি ব্যাংকগুলোর বিশেষ তহবিলের আকারও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটিও খুব ভালো উদ্যোগ। তবে শুধু ফান্ডের আকার বাড়ালেই হবে না, ব্যাংকগুলো সেই ফান্ড বাজারে বিনিয়োগ করছে কি না, সে বিষয়েও তদারকির প্রয়োজন রয়েছে। তাহলেই বাজারে অর্থপ্রবাহ বাড়বে এবং ইতিবাচক প্রভাব দেখা দেবে। বাজার থেকে অর্থ চলে যাওয়ার কারণেই বাজারের এমন অবস্থা। কিন্তু এই সময়ে যদি বাজারে অর্থপ্রবাহ বাড়ে, তাহলে বাজার তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে।’

বিনিয়োগকারীদের মতে, বাজারের তারল্য বৃদ্ধি করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিলেই বাজারের গতি ফিরে পাবে। শুধু নির্দেশনায় নয়, তা বাস্তবায়নেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অগ্রগামী ভূমিকা রাখতে হবে। তবেই বাজার তার নিজস্ব গতি ফিরে পাবে। 

বিনিয়োগকারীদের ধারণা, অর্থ মন্ত্রণালয়ে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেসব সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করলেই বাজার ভালো হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তা বাস্তবায়ন করলে বাজার ভালো হবার সম্ভাবনা রয়েছে। 

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/বিএস/এফএ)