শিল্পকলার ডিজি লাকীর বিরুদ্ধে তদন্তে কতদূর এগোলো দুদক?

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২২, ১১:৩৩ | আপডেট: ২৫ মে ২০২২, ১১:৪৮

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস

লিয়াকত আলী লাকী। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক। এই পদে বসেছেন ১১ বছর। আর দীর্ঘ এই সময়ে তার বিরুদ্ধে জমেছে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ। এর মধ্যে আছে নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ গ্রহণ, ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটপাট, আর্থিক অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার।

লাকীর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন—দুদক। ইতোমধ্যে একজন তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুদকের টিম।

চলতি বছরের ২৪ মার্চ দুদকের উপ-পরিচালাক মোহাম্মদ ইব্রাহীমের পাঠানো এক নোটিশে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমির যাবতীয় হিসাব এবং এই তিন বছরে নিয়োগ পাওয়া ৪৬ ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

দুদকের নোটিশে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মসহ বিভিন্ন দুর্নীতি, ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে পাচারের অভিযোগের বিষয়ে লাকীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।

লাকীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের উপ-পরিচালক ও তদন্তের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ ইব্রাহিম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক তথ্য উপাত্ত আসছে। সেগুলো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখনও অনেক তথ্য উপাত্ত এসে পৌঁছায়নি, আসতে সময় লাগছে। জেলা উপজেলা পর্যায়ের কাগজপত্র পাঠাচ্ছে, এসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যাচাই বাছাই করার আগে তদন্তের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে পৃথক তিনটি সার্কুলারের মাধ্যমে ৪৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় পাস না করেও পূর্বনির্ধারিত প্রার্থীদের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

নিয়োগ প্রদান সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বরপত্র, নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলসহ যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয় দুদক থেকে।

অন্যদিকে লিয়াকত আলী লাকীর ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে দুদকের অন্য একটি নোটিশে বলা হয়, শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক পরিচালিত ব্যাংক হিসাবের ২০১৯-২০২১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ের অর্থ জমা, উত্তোলন ও চেক প্রদান, টিটি, পে-অর্ডার ইত্যাদির বিবরণ এবং উল্লেখিত সময়ে শিল্পকলার সব ব্যাংক হিসাবের বিবরণী দিতে হবে।

দুদকের কাছে থাকা লাকীর বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরের শিল্পকলা একাডেমির অব্যয়িত ৩৫ কোটি টাকা লোপাট করতে তিনি একাডেমি সচিবকে জুন মাসে সরিয়ে দিয়ে অন্য একজনকে সচিবের দায়িত্ব দিয়ে প্রতিবছর জুন মাসে ২৫-৩০ কোটি টাকা লোপাট করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হলে ওইদিনই নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন লাকী। পরে ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে ২৬ কোটি টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লাকীকে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তবে সেসময়ে তিনি তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে বলে দাবি করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/ডিএম)