হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রকৌশলীর লাশ, হত্যা নাকি আত্মহত্যা চলছে তদন্ত

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২২, ১৭:২৬ | আপডেট: ২৫ মে ২০২২, ২১:১৩

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে সুব্রত সাহা নামের এক হোটেলটিরই এক কর্মকর্তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। বুধবার দুপুরে তার হোটেলের দ্বিতীয়তলা ছাদ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

মরদেহ উদ্ধারের পর রমনা থানা পুলিশ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনাস্থলে আলামত সংগ্রহ করে।

সুব্রত সাহা প্রায় ২২ বছর ধরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হোটেলটির কর্মীদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, সুব্রত প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালে কাজে আসেন এবং নবম তলায় ডিউটিরত ছিলেন। তবে কীভাবে সেখান থেকে পড়ে মারা গেলেন সেটা তারা জানেন না। তবে তাদের ধারনা, সুব্রত নবম তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদে বলেন, ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের লবিতে একজন মরে পড়ে থাকতে দেখেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। পরে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের জানালে তারা পুলিশকে খবর দেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে খবর পায় ডিবি।

তিনি বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। তার আগে যে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার, সেটা নেওয়া হচ্ছে।

কিছু সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধারের কথা জানিয়ে ডিসি সাজ্জাদ বলেন, ‘সেগুলি বিশ্লেষন করা হচ্ছে। অন্যান্য তথ্যও সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করবো। এখানে সময় একটা ফ্যাক্টর। তার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা তাদের কাছ থেকেও তথ্য নিচ্ছি।’

পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেছে কি না প্রশ্নে গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের এই উপকমিশনার বলেন, ‘অভিযোগ যা আসবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে নিহতের স্ত্রী নুপুর সাহা সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী আত্মহত্যা করার মতো কোনো ঘটনা গত কয়েকদিনে ঘটেনি। সুব্রতকে হত্যা করে মরদেহ সেখানে ফেলে রাখা হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ স্ত্রী নুপুরের। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

নিহত সুব্রত ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরে। একমাত্র মেয়ে আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

এছাড়া ২০০০ হাজার সালের জুন থেকে কর্মরত আছেন সুব্রত সাহা। তিনি বর্তমানে অতিরিক্ত ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেড (বিএসএল) শাখার কর্মী।

নিহত সুব্রত সাহার চাচাত ভাই জয়ন্ত সাহা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এটা আত্মহত্যা হতে পারে না। নয়তলার ওপর থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করলে লাশের এই অবস্থায় থাকার কথা না। এছাড়া সুব্রতের গায়ে থাকা শার্টের সামনের অংশ ছেঁড়া। মনে হচ্ছে মেরে টানা হেঁচড়া করা হয়েছে। লাশ দেখে মনে হচ্ছে তাকে মেরে ওখানে ফেলে রাখা হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/এএইচ/এসএস/ডিএম)