আশায় দিন গুনছেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা, সুদিন ফিরবেই

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২২, ০৯:৪৬ | আপডেট: ২৬ মে ২০২২, ১১:৩৪

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার মূল্য সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্রে লেনদেন শেষ হয়েছে।

এমন অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা আশায় দিন গুনছেন- বাজারের অবস্থা ভালো হবে। আবার আগের মতো সুদিন ফিরবে বাজারে। বাজারের পতন ঠেকিয়ে তারল্য বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির নানা পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের মনে আশার সঞ্চার করছে। 

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েই শেয়ার ব্যবসা। এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরতে হবে। বাজার পড়েই ওঠার জন্য। আবার বাজার উঠেই পড়ার জন্য। যেহেতু এখন বাজার পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাহলে অবশ্যই খুব শিগগিরই বাজার খুব ভালো অবস্থানে যাবে। এখন যারা বাজার নিয়ে বাজে মন্তব্য করছেন বাজারের অবস্থা ভালো হলে তারাই চুপিসারে ব্যবসা করবেন। তাই প্যানিক হওয়া যাবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনে যেহেতু বাজেট আসছে তাহলে নিশ্চিত করেই বলা যায়, বাজার ভালো হবে। আর বাজার নিয়ে সরকারি সংস্থাগুলো কাজ করছে। অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছিও বাজারে বিনিয়োগ বাড়ছে। এই বিনিয়োগ আরও বাড়বে। তবে প্রয়োজন শুধু ধৈর্য। বিনিয়োগকারীদের হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরতে হবে। আশা রাখতে হবে। তবেই ভালো কিছু সম্ভব।

বিনিয়োগকারীরা জানান, সরকার বাজারের মন্দাভাব কাটিয়ে তারল্য বাড়াতে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছেন। খুব শিগগিরই বাজারে উত্থানে লেনদেন হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। যার ফলাফল হয়তো খুব শিগগিরই বাজারের উত্থানে সবাই দেখতে পাবে। 

অনেক বিনিয়োগকারী বলছেন, অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বাজেট আসছে। তখন পুঁজিবাজার নিয়ে বড় ধরনের একটা বাজেট রাখা হবে। যার মাধ্যমে বাজারের তারল্য অনেকখানি বৃদ্ধি পাবে। বাজার ফিরে পাবে তার নিজ গতি। তাই হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরতে হবে। বাজারের সুদিন ফিরবেই। 

বাজারের উত্থান ফেরাতে নানা পদক্ষেপ নেয় সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। এর মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রি-ওপেনিং সেশন সাময়িকভাবে স্থগিত করা, পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ড ছাড়া অন্যান্য যোগ্য বিনিয়োগকরীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমা এক কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে তিন কোটি টাকা করা আর অনুমোদিত পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে দেড় কোটি টাকা করা, বাজারের তারল্য বাড়াতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য গঠিত তহবিলের ‘অবশিষ্ট আদায় করা’ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃতহবিলে দেওয়ার সুযোগ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে এ তহবিলের মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। 
মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত তহবিলের আওতায় বিনিয়োগকারীদের ঋণ হিসেবে দেওয়া আদায় করা আরও ১৫৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলে যোগ হবে। এ নিয়ে এ তহবিলের আকার দাঁড়াবে ১ হাজার ৯ কোটি টাকা। এসব পদক্ষেপে সামনে বাজেট নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে আশা জাগছে বাজার ভালো হবে। 

বুধবার বাজারের চিত্র:

বুধবার ডিএসইতে ৫১৩ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন থেকে ১৪৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা কম। মঙ্গলবার ডিএসইতে ৬৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৮৭ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে  ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে  দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে।

বুধবার ডিএসইতে ৩৭৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৬টির, কমেছে ২৫০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। বুধবার সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১২০ পয়েন্ট কমেছে। এদিন সিএসইতে ১৫ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৬মে/বিএস/এফএ)