মির্জাপুরের লৌহজং নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন

প্রকাশ | ২৭ মে ২০২২, ১৩:২৫

মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের লৌহজং নদীর পৃথক স্থান থেকে এক যুবলীগ ও এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত প্রায় তিন মাস ধরে লৌহজং নদীর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের চান্দুলিয়া গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পপতি নূরুল ইসলাম সেতুর পূর্বপাশে এবং একই নদীর আনাইলবাড়ি গ্রামে খেয়াঘাট পার এলাকা থেকে এই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

বহুরিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শওকত হোসেন ও বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের রচয়ারম্যান আব্দুস সামাদের ছোট ভাই বিএনপি নেতা ছানোয়ার হোসেন এই বালু উত্তোলন করছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, গত প্রায় তিন মাস ধরে অভিযুক্ত ওই দুই নেতা লৌহজং নদীতে থেকে অবৈধ বাংলা ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। এতে একদিকে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপর দিকে নদীর ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

চান্দুলিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়া ও তার স্ত্রী জনতা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে যুবলীগ নেতা শওকত হোসেন তাদের বাড়ি সংলগ্ন নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। এতে তাদের বসত বাড়ি হুমকির মধ্যে পড়েছে। বাধা দিলেও বালু উত্তোলন কোন অবস্থাতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।

একই অভিযোগ করেন আনাইলবাড়ি গ্রামের জমির উদ্দিন ও আফসার মিয়া।

তারা অভিযোগ করে বলেন, বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদের ছোট ভাই ছানোয়ার গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে লৌহজং নদীর আনাইবাড়ি ঘাটপারে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। চেয়ারম্যানের ভাই হওয়ায় ভয়ে এলাকার কেউ কথা বলার সাহস দেখায় না বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে বহুরিয়া ইউনিয়নের চান্দুলিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পপতি নূরুল ইসলাম সেতুর পূর্বপাশ থেকে যুবলীগ নেতা শওকত হোসেন ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। এর ফলে পাশে কয়েকটি বাড়ি ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। অপরদিকে নদীর আইনাইবাড়ি ঘাট থেকে এক কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ লাইন বসিয়ে চেয়ারম্যানের ছোট ভাই ছানোয়ার হোসেন গত তিন মাস ধরে চান্দুলিয়া গ্রামে বিভিন্ন স্থানে বালু বিক্রি করছেন।

এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা শওকত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন আমি ব্যস্ততার কারণে ওই ব্যবসা করতে পারি না। আমার ছেলে সোহান ড্রেজারের ব্যবসা করে।

অপরদিকে চেয়ারম্যানের ছোট ভাই ছানোয়ার হোসেন বলেন, কয়েক মাস আগে ড্রেজার বসালেও মেশিন নষ্ট এবং লেভারের সংকটের কারণে তেমন বালু উত্তোলন করতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নদী থেকে কোন অবস্থায় বালু উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। অচিরেই অভিযান পরিচালনা করে তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৭মে/এসএ)