গবেষণায় ২৪ বিশ্ববিদ্যালয় খরচ করেনি এক টাকাও!

প্রকাশ | ২৭ মে ২০২২, ১৭:২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সারাবিশ্বই দিন দিন গবেষণার ওপর জোর দিচ্ছে। উন্নত রাষ্ট্রগুলোর উন্নতির পেছনে এই গবেষণা ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। যার ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন, সৃষ্টিশীল চিন্তা ও কর্ম থেকে শুরু করে প্রযুক্তি বিপ্লবে নেতৃত্বে দিচ্ছে তারা। যা তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও আনছে।

কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই খাতে ২০২০ সালে বাংলাদেশের ২৪ বিশ্ববিদ্যালয় এক টাকাও খরচ করেনি। এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে আটটি এবং বেসরকারি ১৬টি। পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নির্বাচিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড-বিষয়ক ছয়টি সমীক্ষা প্রতিবেদনের শিক্ষা খাতে গবেষণা উন্নয়ন খরচ অধ্যায়ে এ তথ্য ওঠে এসেছে। ২০২০ সালের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয় বিবিএসের ওয়েবসাইটে। তবে প্রতিবেদনে গবেষণায় ব্যয় না করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম তুলে ধরা হয়নি।

সমীক্ষায় সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ, প্রকৌশল ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। দেশে রয়েছে ১৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে সরকারি ৪৬টি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৫টি। নির্ধারিত প্রশ্নপত্র এবং জবাব দেওয়া একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেখান থেকে সংগ্রহ করা তথ্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সমীক্ষা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়, ২০২০ সালে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মিলে গবেষণা খাতে ১৩৭ কোটি টাকা খরচ করেছে। এর মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খরচ করেছে ৩৬ কোটি টাকা, আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০১ কোটি টাকা। গবেষণা উন্নয়নে একে তো বরাদ্দ ও খরচ কম। আবার গবেষণার অংশ নয় এমন কিছু খরচও এ খাতে দেখিয়েছে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী সম্পদ হিসেবে জমি কেনা, ভবন নির্মাণকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে গবেষণা উন্নয়নের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে বিবিএস বলেছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়ন উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে থাকে গবেষণা কার্যক্রম। সর্বাধিক গুরুত্ব থাকার পরও গবেষণা উন্নয়নে খরচের পরিমাণ নির্ণয়ে এখনও কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণে গবেষণা-সংক্রান্ত প্রকৃত কোনো পরিসংখ্যান নেই।

এ ব্যাপারে ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন ডিভিশনের পরিচালক মো. কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আসলেই উদ্বেগের। গুণমানসম্পন্ন গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেওয়ার জন্য ইউজিসির নির্দেশনা রয়েছে। তার পরও গবেষণায় বড় ধরনের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সরকারির চেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বেশি খারাপ। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো আবার গবেষণায় ভালো করছে। আগামীতে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছি।

(ঢাকাটাইমস/২৭মে/এমএইচ/ইএস)